তিব্বতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছের নদীতে বিশাল বাঁধ তৈরি করতে চলেছে চিন, বাঁধের জেরে জলাভাব দেখা যাবে উত্তর-পূর্ব ভারতে
আপনজন ডেস্ক: তিব্বতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর উপরে বিশাল বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করছে চিন। এর আগেও ব্রহ্মপুত্রের উপরে একাধিক ছোট বাঁধ নির্মাণ করেছে বেজিং।
তবে চিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নতুন প্রকল্পে উৎপাদিত জলবিদ্যুতের পরিমাণ বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রকল্প মধ্য চিনের থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়েও প্রায় তিন গুণ হতে পারে। কাজেই ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর উপরে বিশাল বাঁধ তৈরি হলে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবল জলাভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, স্বশাসিত তিব্বত অঞ্চলের উৎসস্থল থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদী, অরুণাচলে পৌঁছে যার নাম হয়েছে সিয়াং। অসমে প্রবেশ করার পরে এই সিয়াংই পরিচিত হয় ব্রহ্মপুত্র নামে এবং এর পর ফের সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই বিশাল নদী।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, বিশেষজ্ঞরা অতীতে একাধিক বার জানিয়েছেন যে, সীমান্ত অতিক্রমকারী একাধিক নদীর অবস্থানের সুবাদে ভারতের চেয়ে অনেক সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে চিন। বিশেষ করে তিব্বত অঞ্চল দখলে আসার পরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম নদীগুলি, যেমন সিন্ধু নদ, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, ইরাবতী, সলউইন, ইয়াংৎসে ও মেকং নদীর উৎস রয়েছে বেজিংয়ের কব্জায়। এর মধ্যে ৪৮% নদীর জলই ভারতের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে।
জানা যাচ্ছে, গত সপ্তাহে এক সম্মেলনে চিনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়্যান ঝিয়ং জানিয়েছেন, "ইতিহাসে এমন প্রকল্পের উল্লেখ নেই। চিনের জলবিদ্যুৎ শিল্পে এটি এক ঐতিহাসিক সুযোগ। মূল উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও পরিবেশ সংরক্ষণ, জাতীয় নিরাপত্তা, জীবন যাপনের মানোন্নয়ন, শক্তি উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও জানিয়েছেন, "ইয়ারলাং জ্যাংবো নদীর উপরে প্রস্তাবিত বাঁধ প্রকল্প বছরে ৬০০ কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে, যা বছরে ৩০০ কোটি কিলোওয়াট কার্বনমুক্ত ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।"
আরও পড়ুন: