আপনজন ডেস্ক: অদম্য জেদ আর কঠোর পরিশ্রমের জেরে হায়দরাবাদের এক অটোরিকশা চালকের মেয়ে তেলেঙ্গানার এক মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেলেন। ২০ বছর বয়সি হিনা মুহাম্মদি বেগম নিট পরীক্ষার জন্য তেমন কোনও কোচিংয়ের সুযোগ না পেলেও দারুণ ফল করেন। তার ভিত্তিতে হিনা তেলেঙ্গানার শাদান মেডিকেল কলেজে একটি বিনামূল্যে মেডক্যাল পড়ার সুযোগ পেলেন অর্জন করেছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ভর্তি হতে গেলে প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হয়। কিন্তু ‘এ’ বিভাগের আসনগুলি নিট-এর স্কোরের ভিত্তিতে পূরণ করা হয় এবং তারা অনেক কম ফি নিয়ে থাকে। কিন্তু পরিচালন কোটায় আসনগুলিকে “কলেজের অনুদান” –এর মাধ্যমে ভর্তি করা হয়। হিনা অবশ্য ভর্তি হয়েছে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে। এর ফলে একজন অটো চালকের মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে।
এ ব্যপারে হেনা বলেন, শৈশবকাল থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল একজন ডাক্তার হওয়া। আমার পিতার ত্যাগ ও কষ্টের কারণে এবং আল্লাহর রহমতে আমি সম্ভব হয়ে উঠতে পেরেছি।
তিনি যে চার বোনের মধ্যে সবার বড়। তারা পিতামাতার সাথে থাকতেন। মুসি নদীর তীরে চাদরঘাটে একটি বস্তি অঞ্চলে। এই বস্তির উপর দিয়ে গিয়েছে হাই টেনশন বিদ্যুত লাইনের টাওয়ার। ছায়ার নিচেয় বাস করতে হয়।
হিনা আরও বলেন, বাবার অটো চালিয়ে আয় দিয়ে সংসার চালানো মুশকিল হলৌ পড়াশুনায় ছেদ ঘটাইনি। তিন বোনও পড়াশোনা করছে। যদিও তার বাবা মকবুল বলেন, গরিব মানুষের কাছে শিক্ষাই পাথেয়। তাই ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছি।তবে মেয়ের এই সাফল্যের জন্য তার অবিরাম প্রচেষ্টা, একাকী মনোনিবেশ এবং কঠোর পরিশ্রমকে কৃতিত্ব দেন।
হিনা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং এমএম সরকারি জুনিয়র কলেজ থেকে জুনিয়র কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন। তিনি জানান, সেকেন্ডারিতে আমি ৯.৫ পয়েন্ট পেয়েছি এবং জুনিয়র কলেজে আমি ৭৯.৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছি। আসলে আমি জুনিয়র কলেজে থাকাকালীন নীটের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কোচিং করতে চেয়েছিলাম কিন্তু আর্থিক সমস্যা তা হতে দেয়নি। অবশেষে আমি এমএস জুনিয়র কলেজে ২০১০-২০১৮ এর সময় কোচিং করেছি এবং তা শেষ হয়ে গেছে। হিনা আত্মবিশ্বাস ও সংকল্প নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তিনি এমবিবিএস শেষ করে নিউরোলজি নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে চান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct