আপনজন ডেস্ক: তুরস্কের ৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া মসজিদ জনগণের জন্য খুলে দেওয়ার পর একে একে অন্য ঐতিহাসিক মসজিদগুলিও উন্মুক্ত করার কাজ অব্যাহত রেখেছে এরদোগানের তুরস্ক। অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর আয়া সোফিার মতো বহু মসজিদ সিনাগগ কিংবা খ্রিস্টান উপাসনালয়ে রুপান্তরিত হয়। অথবা মসজিদগুলিকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হয়। সেগুলিকে ক্রমে ক্রমে মসজিদের রূপে ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে তুরস্ক সরকার। সম্প্রতি রাজধানী ইস্তান্বুলের ১৬০০ বছরের ঐতিহাসিক লালা হাযরেটিন পাশা মসজিদ যেটি একটি সিনাগগ ও গির্জা হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল সেটিকে সংস্কার করে পুনরায মসজিদের রূপে ফিরিয়ে দিতে চলেছে তুরস্ক। সংস্কারের পর ২০২১ সালে তা জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ইস্তান্বুল অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অফ এনভায়রনমেন্ট, কালচার অ্যান্ড হিস্টোরিকাল বিল্ডিংয়ের প্রধান ইরথান সারিসিন সংবাদ সংস্থা আনাদলু এজেন্সিকে বলেছেন, লালা হায়রেটিন পাশা মসজিদ হচ্ছে ইস্তানবুলের অন্যতম পুরানো মসজিদ যেটি পঞ্চম শতাব্দীর ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, রোমান সম্রাটের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর একজন ইহুদি স্থপতি কনস্ট্যান্টিনোপলে এটিকে সিনাগগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। যদিও এই শহরের ক্রিস্টানরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনার পর সিনাগগের দেওয়াল ভেঙে দেন। তারপর ৪০০-৪৫০ খ্রিস্টপূর্বে এটিকে গির্জায় রূপান্তরিত করেন। সারিসিন বলেন, ১২০৪ সলে লাটিন আমেরিকার আগ্রাসনের পর এটি বিনষ্ট হয়ে যায়। তার ৩০ বছর পর ১৪৫৩ সালে ইস্তানবুলে অটোসাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা পেয়ে এটিকে মসিজদের রূপান্তরিত করা হয়। এই মসজিদের ইটের মধ্যে এখন লাটিনের কিছু চিহ্ন রয়েছে। তা অনুবাদ করে দেখা গেছে সেগুলি পঞ্চম শতাব্দীর। ইস্তান্বুল অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রটেকশন অফ এনভায়রনমেন্ট, কালচার অ্যান্ড হিস্টোরিকাল বিল্ডিং (ইএসটিইডি) এ সম্পর্কে জানিয়েছে, ২০০৬ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর অবরুদ্ধ হয়ে পড়া ৪০০ মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে এখনকার উত্তর পশ্চিত তুরস্কে।
তারা অটোমান সাম্রাজের নানা ঐতিহাসিক মানচিত্র, তথ্য, জমির দলিল পরীক্ষা করে সেই সময়কার মসজিদগুলির অস্তিত্বের সন্ধানে নেমেছে। ইএসটিইডি অটোমান শাসনামলের মসজিদ ও মাদ্রাসার সন্ধান পেলেও তাকে সংস্কার করে পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নিচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct