আপনজন ডেস্ক: একদিন চিন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সেখানকার উইঘুর মুসলিমদের বন্দি শিবিরে আটকে রেখে তাদের ধর্মীয় আচারবিধি পালন করতে দেওয়া দিচ্ছে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের মানবেতর জীবন নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সরব হয়েছে। এবার চিন সরকারের বিরুদ্ধে উইঘুরদের শ্রমশিবিরে আটকে দাস হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল।
এ ব্যাপারে গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অ্যাগেইনেস্ট প্রভার্টি (জিসিএপি) অবিযোগ করেছ উইঘুর মুসলিমদের জোরপূর্বক কাজে পাঠানো হচ্ছে। আর শ্রম শিবিরেই আটকে রাখা হচ্ছে। তাদেরকে দাস হিসেবে ব্যবহার করে এসব উৎপন্ন করা হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য যার মধ্যে অন্যতম সূতির কাপড়। দাস হিসেবে ব্যবহার করে উৎপাদিত সেইসব সুতি কাপড় বিশ্ববাজারে বিক্রর জন্য চালান করা হচ্ছে
জিসিএপি বলছে, উইঘুরদের বাসিন্দাদের শ্রম শিবিরে আটকে রেখে কাজ করিয়ে নিয়ে বিশ্বের মোট উৎপাদিত সুতি কাপড়ের ২০ শতাংশ উৎপাদন করিয়ে নিচ্ছে চিন সরকার।
উল্লেখ্য, শত শত বছর ধরে তুর্কি মুসলিম সংখ্যাগুরু হিসেবে ওই অঞ্চলে পরিচিত উইঘুরদের ভাষাও নিজস্ব। আগে ওই এলাকাকে চিনের পশ্চিমাঞ্চল কিংবা উইঘুর সংখ্যালঘু এলাকা বলা হলেও চিন সরকার এর নাম দিয়েছে জিনজিয়াং। যার অর্থ নতুন সীমানা। আর সেই রাজ্যে অন্য রাজ্য থেকে লোকজনকে বসবাসের জন্য যেতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
উইঘুরদের সন্তান জন্ম দেওয়ার হার, তাদের ধর্মপালন এবং ভাষা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে চিন সরকার। প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি উইঘুরকে ধরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্যও করছে চিনের সমাজতান্ত্রিক সরকার।
উইঘুরদের জোরপূর্বক কাজে বাধ্য করার অবসান ঘটাতে গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অ্যাগেইনেস্ট প্রভার্টি (জিসিএপি)কে সমর্থন করেছে ইন্ড্রাস্ট্রিঅল গ্লোবাল ইউনিয়ন।
জিসিএপি দাবি জানিয়েছে, জিনজিয়াংয়ের নামকরা ব্র্যান্ড এবং পাইকারী বিক্রেতাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, উইঘুরদের দিয়ে জোরপূর্বক শ্রম দিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তারা সমর্থন করছেন না এবং তা থেকে সুবিধা নিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে বড় বড় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে যারা গ্লোবাল ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেছেন, তাদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে ইন্ডাস্ট্রিঅল।
এরই মধ্যে সুইডেনের কোম্পানি এইচ অ্যান্ড এম জিনজিয়াং প্রদেশের সকল সরবরাহকারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে সমালোচনামূলক লেখা প্রকাশ হওয়ার পরে ভক্সওয়াগন এবং অন্যরা জিনজিয়াংয়ের সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct