আপনজন ডেস্ক: কালি কার্তিকের শহর হিসেবে পরিচিত বাঁকুড়ার প্রাচীন পৌরশহর সোনামুখী। কালীপুজোর রেশ এখনও কাটেনি তার মধ্যেই আজ থেকে গোটা শহর মেতে উঠবে দেব সেনাপতির আরাধনায় ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি তুঙ্গে ।
সোনামুখী শহরে সব মিলিয়ে শ'খানেক কার্তিক পুজো হয়ে থাকে কিন্তু সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত কার্তিক পুজোর সংখ্যা সতেরোটি । যার মধ্যে অন্যতম মাইত কার্তিক বা মধ্যম কার্তিক, বড় কার্তিক , মহিষঘোট কার্তিক। এর মধ্যে বেশকিছু কার্তিকের প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে এই যেমন সোনামুখী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মহিষঘোট কার্তিক। একটা সময় ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল এবং এখানে মহিষের বাথান ছিল। বাগালরা এই এলাকায় মহিষ চরাতেন আনুমানিক সাড়ে চারশ বছর আগে তারাই প্রথম এই মহিষঘোট কার্তিক পূজার সূচনা করেছিলেন সেই থেকে এই কার্তিঁকের নাম হয় মহিষঘোট কার্তিক।
তবে অন্যান্য বছর যে জৌলুস পূর্ণভাবে কার্তিক পুজো হয়ে থাকে এবছর তা আর হচ্ছে না সৌজন্যে নোবেল করোনাভাইরাস । মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সোনামুখীর সমস্ত পুজো কমিটি তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করেছেন । তাছাড়া এবার হচ্ছে না কালীপুজোর মতই কার্তিক কার্নিভালও । প্রতিবছর সোনামুখী চৌমাথায় ১৭ টি কার্তিক একত্রিত হয়ে বাজি ফোড়ানোতে অংশগ্রহণ করেন কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশে এবার তা সম্পূর্ণ বন্ধ । স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস থাকলেও কিছুটা মন খারাপ।
মধ্যম কার্তিক পুজো কমিটির এক সদস্য মিন্টু বিশ্বাস জানান, ৩০০ বছর ধরে আমাদের এই কার্তিক পুজো হয়ে আসছে কিন্তু এ বছর হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে জাঁকজমকভাবে পুজো করতে পারছিনা স্বাভাবিকভাবে আমাদের মন খারাপ । বড় কার্তিক পুজো কমিটির এক সদস্য নন্দলাল বিচ বলেন , সাড়ে ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো হয়ে আসছে কিন্তু করোনার জন্য এবছর কোন অনুষ্ঠানে হচ্ছে না । পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে মাস্ক ও স্যানিটাইজার এর ব্যবস্থা থাকছে বলে তিনি জানান ।
এ বিষয়ে সোনামুখী পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক সুরজিৎ মুখার্জি বলেন , মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সোনামুখী শহরের বিখ্যাত কার্তিক পুজো অনুষ্ঠিত হবে । সমস্ত পুজো কমিটি গুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমরা করোনা বিধি মেনে এবছরের কার্তিক পুজো সম্পন্ন করব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct