আপনজন ডেস্ক: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আসতে এখনও বেশ কয়েক মাসে দেরি আছে। কিন্তু এখন থেকে মুর্শিদাবাদ জেলায় যে ধরনের গোষ্ঠী কোন্দল শাসকদল তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে তাতে শেষ পর্যন্ত কি হয় সেটাই এখন সময়ের অপেক্ষা। কিছুদিন আগে থেকে জেলা সভাধিপতি মোশাররফ হোসেন মধুকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আর এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তৃণমূল-- এটাই মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূলের পুরানো কর্মী-সমর্থকরা।
এই মোশাররফ হোসেন শুভেন্দু অধিকারীর লোক না জেলা সভাপতি সাংসদ আবু তাহের খানের লোক তা নিয়েই চলছে তরজা। মোশারফ হোসেন মধু কিন্তু আবু তাহের খান নয় তিন যে শুভেন্দু অধিকারীর লোক তা স্পষ্ট হয়ে গেছে দিন কয়েক আগে এক স্মরণসভায়। দিন কয়েক আগে জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষের মৃত্যুর স্মরণসভার আয়োজন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। তাতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের দখলে থাকলেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কতটা ভালো হবে তা নিয়ে জেলার তৃণমূল স্তরের সমর্থকদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে বলে অনেকেই বলছেন। এর ফলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী মুর্শিদাবাদ জেলায় বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফায়দা নিয়ে ভালো ফল করার সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই গোষ্ঠী কোন্দলের আঁচ পেয়ে জেলা কংগ্রেস আগের থেকে অনেকটা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অনেক তৃণমূলীরা মনে করছে।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কে আরও উচ্চতর স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঁচজন কোঅর্ডিনেটর নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু জেলা সভাপতি আবু তাহের খান এই সমস্ত কো-অর্ডিনেটর এবং জেলা চেয়ারম্যানকে কোন পাত্তা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
দলেরই কেউ কেউ অভিযোগ করছেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসকে বিরাট লবি তৈরি করে ফেলেছেন।তাদের অভিযোগ জেলার যুব সভাপতি কিংবা শাখা সংগঠনগুলিকে নিয়ে একেবারে চলতে চাইছেন না জেলা সভাপতি আবু তাহের খান। এর ফলে জেলার যুব নেতা থেকে শুরু করে অন্যান্য শাখা সংগঠন এর নেতাকর্মীরা অনেকে আশাহত হচ্ছেন। জেলা শীর্ষ পর্যায়ের অনেক তৃণমূল নেতার অভিযোগ বর্তমান জেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন মধুর সঙ্গে মনোমালিন্য থাকলেও শুভেন্দু পন্থীরাই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা বলছেন আবু তাহের খানের আগে যে সমস্ত নেতারা কংগ্রেস থেকে তৃণমূল এসেছেন তাদের তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ। এছাড়া, অভিযোগ উঠেছে জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের দুই সাংসদ নিজেদের মর্জি মতো দল চালাতে চাইছেন।
জানা গেছে, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫ জন কোঅর্ডিনেটর তৈরি করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু সমস্ত কোঅডিনেটর নিয়ে মাসে অন্তত একবার আলোচনা বসার কথা বলেছেন । কিন্তু জেলা সভাপতি দু মাস পার হয়ে গেলেও কোন বৈঠকে বসেননি বলে অভিযোগ। এছাড়া, কিছু বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে সংপৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন উটতে শুরু করেছে দলের মধ্যে। একাধিক ‘অভিযোগ’ থাকা লালগোলার সাইফুদ্দিন সেখ-এর অনুষ্ঠান বাড়ির উদ্বোধনে গিয়েছিলেন জেলা সভাপতি। সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগ থাকায় এই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েচে বলে মনে করা হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct