আপনজন ডেস্ক: ইউরোপীয় দেশ গ্রিস একসময় অটোমন সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সে সময় গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে মসজিদ সহ নানা ইসলামি স্থাপত্য থাকলেও অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। তার পর থেকে এতদিন গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে মুসলিমদের নামাজ পড়ার জন্য কোনও মসজিদ ছিল না। গ্রিস সরকারের সৌজন্যে এবার রাজধানী এথেন্সে চালু হল সে দেশের রাজধানীর প্রথম মসজিদ। ফলে, অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের প্রায় দুশো বছর পর গ্রিসে এই প্রথম মুসলিমদের স্থায়ী উপাসনালয় স্থাপিত হল। শুক্রবার এই মসজিদটিতে প্রথমবারের মত জুমার নামাজ পাঠের মাধ্যমে তার সূচনা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের কারণে সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে মসজিদ চালুর ক্ষেত্রে। মাত্র ১২ জনেকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় গ্রিসের রাজধানীর প্রথম মসজিদের প্রথম জুমার নামাজে। এদের মধ্যে ছিলেন ৯জন পুরুষ ও তিনজন মহিলা।
এ নিয়ে মসজিদ গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য হায়দার আশির বলেন, এথেন্সে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা এই মসজিদের জন্য অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করেছি। আল্লাহকে ধন্যবাদ যে শেষ পর্যন্ত মসজিদটি খুলেছে এবং স্বাধীনভাবে আমরা নামাজ পড়তে পেরেছি।
উল্লেখ্য, ১৮৩৩ সালে অটোমানদের হাত থেকে গ্রিস মুক্ত হবার পর এথেন্সে আর কোনও মসজিদ ছিল না৷ ১৮৯০ সালে গ্রিসের সংসদে এথেন্সে একটি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব গৃহীত হলেও তা নানা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে বাস্তবায়িত হয়নি৷তাই প্রায় ১৪ বছর আগে রাজধানী এথেন্সে মসজিদ তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু কট্টর খ্রিস্টান রাষ্ট্র গ্রিসের পার্লামেন্টে মসজিদ চালু করার অনুমতি মিলচিল না। অবশেষে ২০১৬ সালে গ্রিসের পার্লামেন্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই মসজিদটি নির্মাণের অনুমোদন দেয়৷ এরপর থেকে এর নির্মাণকাজ চলছিল৷ বর্তমানে বৃহত্তর এথেন্সে প্রায় তিন লাখ মুসলিমের বাস৷
গ্রিসের মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধ আন্না স্ট্যামৌ বলেন, এতদিন আড়ালে নামাজ পড়তে হত। এখন এই মসজিদটা আমাদের জন্য বিশাল পাওনা। স্ট্যামাও আরও বলেন, এই মসজিদে ৩০০ পুরুষ ও ৫০জন মহিলার নামাজ পড়ার সঙ্কুলান হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct