মালদা : বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে স্যোশাল মিডিয়ায় কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগে এক অধ্যাপককে শো কজের চিঠি ধরাল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার শো কজের চিঠি ওই অধ্যাপককে পাঠানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্বাক্ষরিত ওই কারণ দর্শানোর চিঠিতে এডুকেশন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ওই সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক বিধিভঙ্গের একাধিক অভিযোগের উল্লেখ রয়েছে। শো কজের চিঠি পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে ওই অধ্যাপককে। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই পাঁচ বছর আগের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসব কেন্দ্রীক একটি বিষয় নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় ওই অধ্যাপক লাগাতার কুৎসা ছড়াচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। শো কজের চিঠির সঙ্গে স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো ওই কুৎসার পোস্টগুলিও পাঠানো হয়েছে। পোস্টগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্তৃপক্ষ বিরোধী একাধিক মন্তব্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি অধ্যাপকের করা বিশ্ববিদ্যালয় বিরোধী ওই মন্তব্যগুলি নিয়ে উত্তরবঙ্গের একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটুটকে অমান্য করে কীভাবে একজন অধ্যাপক গণমাধ্যম ও স্যোশাল মিডিয়ায় প্রতিষ্ঠান বিরোধী মন্তব্য ও কুৎসা ছড়াতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে শোকজ চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটুটের ৯৬ ও ৯৭ ধারার একাধিক উপধারায় উল্লেখিত বিধি ভঙ্গ করা হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা, প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংহতি নষ্ট করা ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মিথ্যা রটনার অভিযোগ আনা হয়েছে এডুকেশন বিভাগের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শো কজের সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এর আগেও বহিরাগতদের সঙ্গে আঁতাত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশকে প্ররোচিত করে ভুল পথে চালিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অগণতান্ত্রিক কাজকর্মে তাদের লিপ্ত করার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজকর্মে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের বিষয়টি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে ফের ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একই রকম ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বিরোধী কাজকর্ম করার অভিযোগ ওঠায় এতে অন্যরকম ইঙ্গিত পাচ্ছে জেলার শিক্ষামহল। বিশেষত, নানা রকম ঝড় ঝাপটা পেরিয়ে করোনা পরিস্থিতিতেও যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পরীক্ষা পরিচালনা করা ও ফলাফল প্রকাশ করার কাজ করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্থিতাবস্থাকে বিঘ্নিত করতেই কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে এমন করা হচ্ছে কি না, তাও ভাবাচ্ছে সকলকে। পাঁচ বছর পুরোনো একটি ইস্যুকে যেভাবে টেনে এনে কুৎসা রটানোর অভিযোগ উঠেছে তা নিঃসন্দেহে বহু প্রশ্নের জন্ম দেয়। যদিও এই বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপকের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct