আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবাংলার একটি নামী শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে মুর্শিদাবাদ ভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী জেএইচএম ইন্টারন্যাশাল প্রাইভেট কোম্পানি।যদিও এই শিল্পগোষ্ঠী তাদের ব্যবসা শুধু এ রাজ্যে নয়, প্রতিবেশী বাংলাদেশেও বিস্তার করে চলেছে।
বাংলাদেশে তাদের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে গত শুক্রবার ঢাকার একটি কমিউনিটি হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন জেএইচএম ইন্টারন্যাশাল প্রাইভেট কোম্পানীর প্রধানচেয়ারম্যান মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ব্যবসা শুরু করে জেএইচএম। বাংলাদেশ ছাড়াও আরো বিভিন্ন দেশে জেএইচএম গ্রুপের ব্যবসা রয়েছে। আন্তর্জাতিক এই কোম্পানিটির কর্ম দক্ষতায় বিগত তিন বছরে জেএইচএম বাংলাদেশে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সাউথ আফ্রিকা, রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারত থেকে কয়লা রফতানি করে সুনাম অর্জন করেছে।দুবাই ও গুজরাট থেকে পাথর রফতানিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জিরা, লং, এলাচি, দারুচিনি, পেঁয়াজ, ডাল আমদানি করে সেগুলো সরকারি সকল নিয়ম কানুন মেনে বাংলাদেশের বাজারে সরবরাহ করে চলেছে।
গত আর্থিক বছরে বাংলাদেশে কয়লা ও স্টোনচিপস রফতানি করে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। তা বিদেশি কোম্পানি হিসাবে রেকর্ড করে। জেএইচ এমের রয়েছে কন্সট্রাকশন প্লান্টও। ওই প্লান্টের মাধ্যমে পদ্মা সেতু,রুপপুর পরমানু কেন্দ্র,পায়রা বন্দরসহ বাংলাদেশের বড় বড় মেগা প্রকল্পে কাজ করছে জেএইচএম। পশ্চিমবাংলায় জেএইচএম' গ্রুপের দুটি রাইস মিল।সেখানে কর্মরত রয়েছে ১,২০০ শ্রমিক।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর নোয়াপাড়া, ভৈরব, কুমিল্লা দাউদকান্দি, মেঘনা, কাঞ্চনব্রীজ, নারায়ণগঞ্জসহ বাংলাদেশে ১২ টি অফিস, ৬টি কয়লার ডিপো,২০ টির অধিক পাথরের ডিপোসহ বিভিন্ন সেক্টরে মোট ২,৬০০ শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে ছেড়ে আসা কয়লা, পাথর বোঝাই জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ লাইটার জাহাজে কর্মরত আছেন অনেকে।
জেএইচএম গ্রুপের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান আরও বলেন, গত তিন বছরে তাদের এই কোম্পানি যথেষ্ট মুনাফা অর্জন করেছে এবং বাংলাদেশ সরকার কে বিপুল অর্থের ট্যাক্স প্রদান করেছে। বাংলাদেশে কয়লা, পাথর সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে যে শূন্যতার সৃষ্টি হচ্ছিল তা অনেকটাই পূরণ করতে পেরেছে। ফলে বাংলাদেশ শাসক দলের কাছ থেকেও সুনাম অর্জন করেছে।
তিনি বলেন মাঝে একবার কয়লা রফতানিতে কিছুটা ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছিল সেই মুহূর্তে তারা ইন্দোনেশিয়া ও সাউথ আফ্রিকা থেকে উন্নত মানের কয়লা আমদানি করে সেই ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের কোম্পানী সবসময় উন্নত মানের কয়লা সরবরাহ করে, যা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের শিল্পপতিদের কাছ থেকেও সুনাম অর্জন করেছে।
তিনি আরো বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয় পশ্চিমবাংলার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে ফিরোজা হেলথকেয়ার নামে একটি একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে এখানে বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। প্রতিদিন ৩০০ বেশি রোগী দেখা হয়। গত চার বছর ধরে চিকিৎসা পরিষেবা অব্যাহত রয়েছে। আর এর ফলে জেলার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
কোম্পানির অপর দুই ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর আলম ও হুমায়ুন কবীর জানান, বাংলাদেশে তারা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে।সব সময় তারা উন্নত মাল সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়। আর তার জন্য এ দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যই বেশিপছন্দ করেন। তারা বলেন ব্যবসার ক্ষেত্রে সব সময় উন্নত মানের দ্রব্যাদি সরবরাহ করতে পছন্দ করেন। এর ফলে বাংলাদেশের কোন কিছুই স্টক থাকে না। তারা বলেন মানুষ সবসময় ভালো জিনিস পছন্দ করেন।মানুষের সেই মর্যদার গুরুত্ব দিয়েই কাচামাল আমদানি করা হয়।আর সেই লক্ষেই বাংলাদেশে কাজ করে চলেছেন।
উল্লেখ্য, এই প্রথম কোনো ভারতীয় কোম্পানি যারা রশিয়ার বড় বড় কোম্পানিকে সরাসরি কাচা মাল সরবরাহ করছে বাংলাদেশে বিভিন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct