গৈরিক সাহা, ডানকুনি, আপনজন: যেকোনো আবিষ্কারের গল্প শুনতে সকলেরই ভালো লাগে। তবে সেই গল্প যদি খোদ আবিষ্কারকের থেকে শোনা যায় তাহলে তাঁর গুরুত্ব বহুগুণ বেড়ে যায়। এমনই এক মুহুর্তের সাক্ষী হয়ে রইল পাঠভবন ডানকুনির ছাত্র-ছাত্রীরা। সোমবার বিদ্যালয়ে এসে নিজের আবিষ্কারের গল্প শোনালেন বিজ্ঞানী ড: রমেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায়, যার ঝুলিতে রয়েছে এমন ৩৫টি আবিষ্কার যেগুলি পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এদিনের ওই সেমিনারে মূলত দশম ও একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিল। শুরুতেই তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ড: দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁকে, বিদ্যালয়ের ‘সুকুমার মেলার’ স্মৃতি স্বরূপ একটি কফি-কাপ উপহার দেওয়া হয়। এরপর উপস্থিত পড়ুয়ারা বিদ্যালয়ের রীতি অনুসারে, রবীন্দ্র-সঙ্গীতের মাধ্যমে তাঁকে বরণ করে নেন। শুরু হয় সেই বহু প্রতীক্ষিত সেমিনার।
প্রথমেই ছাত্রছাত্রী দেখে দেখালেন পকেট ভেন্টিলেটর। কোভিড মহামারীর ভয়াবহতার কথা সকলের স্মৃতিতে এখনও টাটকা। সেই কোভিড মোকাবিলায়, দেহে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে এই যন্ত্র। নাম থেকেই স্পষ্ট এই জিনিস যেকোনো স্থানে পকেটে করেই নিয়ে যাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি চিকিৎসক দের জন্য ডিজাইন করেছিলেন এমন এক রোবট যা রোগীর শুশ্রূষায় সহোযোগিতা করবে। পাশাপাশি লাই ডিটেকটর, ওপেক অ্যানালাইজার, মাইক্রো প্লাস্টিক ডিটেকটর, মাইক্রো ইসিজি মেশিন, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার সহ একাধিক যন্ত্র দেখান তিনি। পোর্টেবল মাল্টিপারপাস মাইক্রোস্কোপ তৈরির নেপথ্য কাহিনী শুনে অনুপ্রাণিত হয় পড়ুয়ারা। পাশাপাশি তার আবিষ্কৃত মাইক্রো মাইক্রোস্কোপে পোস্তদানা, মশা, পাখির ডানার অংশ ইত্যাদি কেমন দেখায় তা দেখে অভিভূত সকলে। তিনি প্রায় ১২টি মাইক্রো মাইক্রোস্কোপ এনেছিলেন। পড়ুয়ারা সরাসরি ব্যবহার করে দেখেছে। ওইগুলি ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে যান তিনি। এখানেই শেষ নয়, তাঁর তৈরি করা অপ্টিকাল টেলিস্কোপে সূর্য, চাঁদের তোলা বিভিন্ন ছবিও দেখান তিনি। মাত্র ৪ বছর বয়সে তিনি বানিয়ে ফেলেন পিন হোল ক্যামেরা। কিভাবে বানিয়েছিলেন, ছাত্রছাত্রী দের সাথে ভাগ করে নেন সেই গল্প। সেমিনার এর শেষে তিনি সকলকে লড়াই করার মানসিকতা দিয়ে গেলেন, বুঝিয়ে গেলেন কঠিন পরিস্থিতিতে কিভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হয়। তাঁর সান্নিধ্যে আমরা সকলে সমৃদ্ধ হলাম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct