নিজস্ব প্রতিবেদক, সন্দেশখালি, আপনজন: ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার সন্দেশখালি যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে আটক হল। উপস্তিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিত মাইতি, রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস ব্যানার্জি, কুতুবুদ্দিন ফাতেহী প্রমুখ । সন্দেশখালিতে উতপ্ত পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্য ঐ প্রতিনিধি দল সন্দেশখালি যাচ্ছিল। ১৪৪ ধারা জারি করে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রাখা হচ্ছে ঐ অঞ্চলকে। ঐ এলাকার খবর যাতে বাইরে না আসে সেজন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে। এমনকি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদেরও এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এর অর্থ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই দুর্বার প্রতিবাদী আন্দোলনকে দমন করার ফন্দিফিকির করছে পুলিশ বলে দাবি করেন তারা। তারা বলেন পশ্চিমবাংলার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি তলানিতে চলে যাচ্ছে। গতকালই কৃষকদের বিক্ষোভ ঠেকাতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে পুলিশ নির্মমভাবে লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
বোঝা যাচ্ছে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী বেসামাল, তাঁর নিয়ন্ত্রণ থেকে রাজ্যের সামগ্রিক আইনী ব্যবস্থা বেরিয়ে যাচ্ছে। সন্দেশখালির ঘটনা তারই ইঙ্গিত। তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনে নির্মম জুলুম ও অত্যাচারের শিকার সন্দেশখালি সহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষেরা। লুঠতন্ত্র, দুর্নীতিতন্ত্র, সিন্ডিকেট রাজ চলেছে অবাধে। এমনকি ঐ অঞ্চলের মহিলাদের শ্লীলতাহানি ঘটিয়ে চলেছিল শাসকদলের নেতারা। অত্যাচারিত, অপমানিত হয়ে শেষপর্যন্ত মানুষ ক্ষোভে-বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। আমরা কুর্নিশ জানাই ঐ এলাকার মা-বোনেদের। তাঁরা একত্রিত হয়ে আজ লাঠি হাতে রাস্তায় নেমেছেন। জমি- ভেড়ি দখলদারদের বিরুদ্ধে, ধর্ষকদের বিরুদ্ধে তারা আজ ঐক্যবদ্ধ। পাশাপাশি আমরা দেখছি পুলিশ প্রশাসনের সীমাহীন ব্যর্থতা। তারা অপরাধীদের ধরছে না। উল্টে তারা অপরাধীদের হয়ে কাজ করছেন। সেই কারণে ব্যর্থতা ঢাকতে বিরোধীদলগুলির ওপর হামলা করছে, ধরপাকড় করছে। আজ মিথ্যা অভিযোগে ঐ এলাকার প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে আটক করা হয়েছে। আমরা দেখেছি ভাঙড়, ক্যানিং সহ রাজ্যের সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট গুন্ডাবাহিনী তোলাবাজি, কাটমানি, কয়লা-বালি-মাটি-নদী ইত্যাদি বিক্রি করে দিচ্ছে। আর পুলিশের একাংশ এই সমস্ত অপরাধে সরাসরি যুক্ত হয়ে পড়ছে।এই পরিস্থিতি সহ্য করা যাবে না। এর বিরুদ্ধে জনগণের জোট তৈরি করতে হবে। সন্দেশখালি সেই পথ দেখাচ্ছে। আইএসএফ বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের পাশে থেকে সবসময় লড়াই করছে।বঞ্চিত, অপমানিত মানুষকে প্রলোভিত করে, দান-খয়রাতি করে বেশিদিন আটকে রাখা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবাংলাকে দেনায় ডুবিয়ে দিতে চাইছেন। রাজ্যের প্রতিটি মানুষের মাথাপিছু দেনা ৬০ হাজার টাকারও বেশি। তাই রাজ্যকে সর্বনাশের পথ থেকে বাঁচাতে জনগণের জোট ছাড়া আর বিকল্প পথ নেই বলে জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct