আপনজন ডেস্ক: কালজয়ী সব কবিতা ও ছড়ার স্রষ্টা, জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার আর নেই। জানা গেছে, মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে মৃত্যু হয়েছে কবির। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মূলত ছোটদের জন্যই লিখতেন ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।মজার মজার লেখনীতে সবাইকে মুগ্ধ করার পাশাপাশি তাঁর লেখায় বারবার উঠে এসেছে সামাজিক স্যাটায়ার। ‘জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’- এই কবিতার সঙ্গে বাঙালিরা অতিপরিচিত। আর এই লেখার সৃষ্টিকর্তা ভবানীপ্রসাদ মজুমদার। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ছড়া লিখেছেন তিনি।নিজের লেখায় করেছেন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মজার ছড়া, সোনালি ছড়া, কলকাতা তোর খোল খাতা, হাওড়া-ভরা হরেক ছড়া, ডাইনোছড়ার মতো বহু বই লিখেছেন। লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সত্যজিৎকে নিয়ে ‘রবীন্দ্রনাথ নইলে অনাথ’ ও ‘ছড়ায় ছড়ায় সত্যজিৎ’-এর মতো কবিতা।১৯৫৩ সালের ৯ এপ্রিল হাওড়া জেলার জগাছা থানার অন্তর্গত দাশনগরের কাছে দক্ষিণ শানপুর গ্রামে জন্ম কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের।তাঁর বাবা ছিলেন নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং মা ছিলেন নিরুপমা দেবী। কবির শৈশবজীবন কেটেছে সেই গ্রামেই। কর্মজীবনে প্রবেশ করে কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার শিক্ষকতা করেছেন। বিশিষ্ট এই কবি ও ছড়াকার হাওড়া জেলার শানপুর গ্রামের কালিতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়-এ একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।সেই সঙ্গে লেখালেখিও চালিয়ে গিয়েছেন।তাঁর লেখা ছড়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ‘আ-মরি বাংলা ভাষা’ এবং ‘বাংলাটা ঠিক আসে না’। তিনি সাম্মানিক হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে সন্দেশ পত্রিকার পক্ষ থেকে ‘সুকুমার রায় পদক’ পান। লেখালেখির জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকেও পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া ‘শিশুসাহিত্য পরিষদ পুরস্কার’, ‘অভিজ্ঞান স্মারক’, ‘ছড়া সাহিত্য পুরস্কার’সহ এক শর বেশি পুরস্কার পেয়েছেন এই বর্ষীয়ান কবি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct