নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: স্বামী চোখের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছে প্রায় ১৫ বছর আগে।লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনক্রমে সংসার চালাচ্ছেন স্ত্রী।যত দিন যাচ্ছে অভাবের অন্ধকার গ্রাস করছে পরিবারকে।সাত বছর আগে ২০১৭ সালের বন্যায় মাটির ঘর ভেঙে যাওয়ার পর কোন মতে পাটকাঠির বেড়া দিয়ে পলিথিন টাঙিয়ে বসবাস করছেন।কিন্তু আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তারা ঘর পাননি। মেলে না বার্ধক্য ভাতা।দৃষ্টিশক্তিহীন স্বামীর জন্য বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সার্টিফিকেট আবেদন করেও পাননি। সার্টিফিকেটের জন্য তিন হাজার টাকা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই অভাবী ওই অভাবী পরিবারটির।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশুয়া দাস (৬৬)। ১৫ বছর আগে অসুস্থতা জনিত কারণে সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টিশক্তি হারান। এর পূর্বে অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করতেন। বিশুয়া বাবুর অন্ধত্বের পর থেকে স্ত্রী কুশমি দাস (৫০) লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে কোনোক্রমে সংসার চালান। লোকের বাড়িতে কাজ করেই কোন মতে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। বয়সের ভারে কুশমিও এখন সেই ভাবে কাজ করতে পারেন না। ছেলে বলরাম দাস মহেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র।এই মুহূর্তে অভাবের অন্ধকার ব্যাপক ভাবে গ্রাস করেছে বিশুয়া দাসের পরিবারকে। অর্থাভাব,খাদ্যাভাব এমনকি থাকার জায়গাটুকুও ঠিক নেই। বিশুয়া দাসের স্ত্রী কুশমি দাস জানান, ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায় মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপর থেকে আর দেওয়াল নেই। পাটকাঠির বেড়া এবং পলিথিন দিয়ে কোন ভাবে থাকছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের জন্য আবেদন করেও মেলেনি। বিশুয়া বাবু বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সার্টিফিকেটের জন্য বারবার আবেদন করেছেন। কিন্তু অভিযোগ তিন হাজার টাকা চেয়েছিলেন এক ব্যক্তি। না দিতে পারায় সার্টিফিকেট হয়নি। বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করেছেন সেটাও মেলেনি। রেশন থেকে মেলে চাল। আর স্থানীয় হাট বাজার থেকে বাজার শেষে পড়ে থাকা পচা শাক সবজি কুড়িয়ে এনে রান্না করে কোন মতে পেটে দেন। কিন্তু এই পরিবারের দিকে নজর পড়েনি জন-প্রতিনিধি বা প্রশাসনের।জেলা পরিষদের সদস্যা মার্জিনা খাতুন বিডিওকে বলে বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট তৈরি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct