নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: সোমবার আয়োজিত হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের ছাত্র-প্রাক্তনী সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে এবং আলীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক সেমিনার। “আরবি ভাষা ও সাহিত্যে আমাদের প্রয়াত অধ্যাপক ড. বদিউর রহমানের বিশেষ উল্লেখসহ বাংলার আরবি শিক্ষাবিদদের অবদান” শীর্ষক এই সেমিনারে বাংলাভাষীদের পাশাপাশি অন্যান্য দেশ ও রাজ্য থেকে উৎসুক ছাত্রছাত্রী, গবেষক ও অধ্যাপকদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। আন্তর্জাতিক স্তরের এই কর্মযজ্ঞের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ও ফারসী বিভাগের অধ্যাপক তথা ছাত্র-প্রাক্তনী সমন্বয় পরিষদের পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ডঃ মোঃ ইশারত আলী মোল্লার (প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান) এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এবং এশিয়াটিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক স্বপন কুমার প্রামাণিক উপস্থিতিতে মূলপর্বের শুভারম্ভ হয় কুরআন পাঠের মাধ্যমে । সূচনালগ্নে আরবী সাহিত্যের বিদগ্ধ পণ্ডিত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক মোহাঃ সানাউল্লাহ নাদবী তাঁর ‘কী-নোট অ্যাড্রেসে’ বলেন - ভারতবর্ষে বানিজ্যিক মাধ্যমে এবং সুফি আন্দোলনের মাধ্যমে আরবী ভাষার ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছিল । বাংলার অসংখ্য শিক্ষাবিদ আরবী ভাষা ও সাহিত্যে অবদান রেখেছেন তন্মধ্যে ওবাইদুল্লা ওবাইদি সহ প্রয়াত অধ্যাপক বদিউর রহমানের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন অধ্যাপক ডঃ বদিউর রহমান কুড়িটি জার্নালে গবেষণাধর্মী লেখা প্রকাশ করেন। অধ্যাপক স্বপন কুমার প্রামাণিক বলেন অধ্যাপক বদিউর রহমান ছিলেন আমার খুব ঘনিষ্ঠ। তাঁর কন্যা মারা যাওয়ার পর তিনি কেমন যেন বদলে গিয়েছিলেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটিতে আরবী ভাষা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার কাছ থেকে আরবী ও ফারসি ভাষা সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করেছেন। এই আন্তর্জাতিক সেমিনারে ‘গেস্ট অফ অনার’ হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন আলীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সোস্যাল সাইন্স এবং হিউম্যানিটিজ বিভাগের ডীন অধ্যাপক ডঃ মসিহুর রহমান । তিনি বলেন আমার শিক্ষক এবং সুপারভাইজার ছিলেন অধ্যাপক বদিউর রহমান তাঁর মত মহানুভব, উদার শিক্ষাবিদ খুব ছিলেন। গেস্ট অফ অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজ, লাইব্রেরি এবং ইনফরমেশন সাইন্স ও জার্নালিজম বিভাগের ডীন অধ্যাপক বিপ্লব চক্রবর্তী। তিনি বলেন তাঁর সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তার বাড়িতে অনেকবার গিয়েছি। এই আন্তর্জাতিক সেমিনারের সভাপতি সংস্কৃত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সত্যজিৎ লায়েক বলেন ১৮৮৯ সাল থেকে আমাদের পরিচয়, তিনি যেমন ফিগার এর দিক দিয়ে লম্বা তার থেকে ও বড় ছিল তার হৃদয়।অধ্যাপক বদিউর রহমানের সহপাঠী সৈয়দ আব্দুল আজিজ স্মৃতিচারনা করতে গিয়ে বলেন তাঁর মত রসিক এবং সৎ বন্ধু আমার লাইফে দেখিনি।তাঁর ভাগ্নে ডঃ ইমতিয়াজ বলেন তিনি প্রথম দিকে আরবী ভাষা নিয়ে পড়তে সম্মত ছিলেন না পরে অবশ্য তিনি পরিবারের পীড়াপীড়িতে আরবী ভাষা নিয়ে পড়া শুরু করেছিলেন।তাঁর ভাই ডঃ লুৎফর রহমান বলেন তিনি ছিলেন পিতা মাতার অত্যন্ত অনুগত। তাছাড়া উল্লেখ্য যে অধ্যাপক মোঃ বদিউর রহমান এর আরবী সাহিত্যে অবদানের উপর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের মোট ১২ জন স্কলার রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct