আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ৬ থেকে ৮ জানুয়ারি ভিকারাবাদ জেলায় তিন দিনব্যাপী তবলিগ জামাতের সভা বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছে। তেলেঙ্গানা সরকারের সংখ্যালঘু কল্যাণ দফতরের অধীনস্ত তেলেঙ্গানা স্টেট ওয়াকফ বোর্ড গত ৩ ডিসেম্বর ক্ষমতায় আসার পর তবলিগ জামাতের আসন্ন তিন দিনের সমাবেশের জন্য ২,৪৫,৯৩,৮৪৭ টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে।বৃহস্পতিবার, ২১ শে ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এই কর্মসূচি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। বিশ্ব বিন্দু পরিষদ তবলিগ জামাতের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্মান্তর, লাভ জিহাদ এবং সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি করার অভিযোগ তুল বলেছে, এই সংগঠনের জন্য তহবিল অনুমোদন রাজ্য সরকারের “রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজ”-এর শামিল। উল্লেখ্য, তবলিগি জামাত একটি নিখাত অরাজনৈতিক ইসলামি ধর্মীয় সংগঠন। তবলিগ জামাত ইহ জগতের কাজ থেকে বিরত থেকে পারলৌকিক পুণ্য লাভের দিশা দেখাতে ইসলামের বাণী প্রচার করে থাকে। েসেই সঙ্গে শুধুমাত্র মুসলিমদেরকেই ইসলাম অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে থাকে। সেই তবলিগি জামাতের বিরুদ্ধে ভিএইচপির তেলেঙ্গানা সভাপতি সুরেন্দর রেড্ডি, পান্ডারীনাথ, প্রচারপ্রামিক পাগুদাকুলা বালাস্বামী এবং বজরং দলের রাজ্য আহ্বায়ক শিব রামুলু বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তাতে দাবি করেছেন, আগামী তবলিগ জামাতের তিনদিনের ইজতেমা বন্ধের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত এবং অবিলম্বে সভার অনুমতি বাতিল ও নিষিদ্ধ করা উচিত। অন্যথায়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দল বৃহত্তর আকারে আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির বিরুদ্ধে এই কর্মসূচির প্রতি সহানুভূতি দেখানোর অভিযোগ এনে ভিএইচপি দাবি করেছে, কংগ্রেসের শাসনামলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ প্রসারিত হচ্ছে। ভিএইচপি ও বজরং দলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলাম প্রচার এবং ধর্মান্তরের মতো কর্মসূচির জন্য প্রশিক্ষণ দানকারী তবলিগ জামাত সংগঠনকে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করা রাজ্য সরকারের পক্ষে ঠিক কাজ হয়নি।
ভিএইচপি নেতারা, রাজ্য সভাপতি সম্পাদক সুরেন্দর রেড্ডি, পান্ডারীনাথ এবং প্রচারপ্রামিক পাগুদাকুলা বালাস্বামী জানিয়েছেন, তারা তহবিল অনুদানের বিরুদ্ধে রাজ্যের রাজ্যপাল, হাইকোর্ট এবং ডিজিপির কাছে যাবেন।উল্লেখ্য, আগামী ৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারি তেলেঙ্গানার ভিকারাবাদ জেলার নিয়ামত নগরের পরতি মণ্ডলে তবলিগ জামাতের তিনদিনের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই ইজতেমায় তেলেঙ্গানা ছাড়াও অন্য রাজ্য থেকে তবলিগি জামাতের মুসল্লিরা যোগ দেবেন। এমনকী বিদেশ থেকেও তবলিগি জামাতের সদস্যরা যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই ইজতেমা উপলক্সে বেশ কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হবে। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের একসঙ্গে জমায়েতের ফলে যাতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয় তার জন্য দূরীকরণে তেলেঙ্গানা সরকারে ওয়াকফ বোর্ড তাদের তহবিল আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তবে, ওয়াকফ বোর্ড এই টাকা তবলিগি ইজতেমায় পরিষেবার জন্য রাজ্য সরকারের মাধ্যমে বিভিন্ন দফতরের জন্য বরাদ্দ করা হয়। এ ব্যাপারে গত ১৩ ডিসেম্বর তেলেঙ্গানা সরকারে সংখ্যালঘু কল্যাণ দফতর এক নির্দেশে এই অর্থ বরাদ্দের কথা জানায়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় এই বরাদ্দ টাকা তেলেঙ্গানা ওয়াকফ বোর্ড থেকে প্রাপ্ত। বরাদ্দের বিবরণ হিসেবে পানীয় জলের জন্য ৮৫ লক্ষ, অস্থায়ী পাইপ লাইনের জন্য ৬৮লক্ষ, রাস্তা মেরামত ও পার্কিংয়ের জন্য ৪০ লক্ষ, বিদ্যুতের জন্য ৪৮, ৩৫, ৮৪৭ টাকা, পরিবহণের জন্য ৫৮ হাজার টাকা খরচের কথা বলা হয়েছে। আর তবলিগি জামাতের ইজতেমার জন্য তেলেঙ্গানা সরকারের বরাদ্দ নিয়েই আপত্তি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের। যদিও, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ সরকার কুম্ভ মেলার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কোনও মুখ খোলেনি। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ সরকার তাদের বাজেট মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫-এর প্রস্তুতির জন্য ২,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৬২১.৫৫ কোটি টাকা। প্রতি ১২ বছর পর পর এই ধর্মীয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যোগী সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অযোধ্যায় রাস্তা প্রশস্ত ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যও ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct