সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: ইন্দাসের সাঁতরা বাড়ির বড় বৌমা পূজিত হলেন মা কালীর বেশে , প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে আসছে এই রীতি । গলায় রক্ত জবা কপালে লাল চন্দন এই বেশেই পূজিতা হন মা মুন্ডমালিনী। হ্যাঁ ঠিক এরকমই দেখতে অভ্যস্ত মায়ের ভক্তরা। কিন্তু এক্ষেত্রে মা কালী কোন চিন্ময়ী রূপের নন, মা সাক্ষাৎ জীবন্ত।যেখানে মন্ডপে মন্ডপে বা বিভিন্ন পারিবারিক পুজোতে দেবী কালীর মূর্তি পুজো করা হয়।সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের মির্জাপুরে সাঁতরা বাড়িতে মুর্তির পরিবর্তে বড় বৌমাকে কালীর আসনে বসিয়ে পূজিত হতে দেখা গেলো। বছরের পর বছর হয়ে আসছে এই আচার।রীতি অনুযায়ী সাঁতরা পরিবারের বড় বৌমাকে গলায় রক্ত জবা এবং কপালের লাল চন্দনের তিলক দিয়ে সাজাতে দেখা গেল। তারপর শুরু হলো একেবারে শাস্ত্রমতে পুজো পাঠ। আর এই জীবন্ত দেবীর পুজো অর্চনা দেখতে দূর দুরান্ত থেকে ভিড় জমালেন অসংখ্য মানুষ। পূর্বপুরুষেরা ,এখন অবশ্য পাকাপোক্ত মন্দির তৈরি হয়েছে, সেখানেই চললো দেবীর আরাধনা। এই সাঁতরা পরিবারের বর্তমানের বড় গৃহবধূ হীরা বালা সাঁতরা গত ৩৮ বছর ধরে মা কালি রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন, এবারেও তার অন্যথা হলো না।।তাঁকে দেবীর আসনে বসানোর পর,পুরোহিত তাকে দেবী রূপেই পুজো করলেন। এই পরিবারের জামাই শ্যামল সাঁতরা জানান, “দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে এই পূজো হয়ে আসছে,পরিবারের সব সদস্যরা বিভিন্ন কাজ কর্মের সাথে যুক্ত হওয়ায় আগের তুলনায় আড়ম্বর আরো বেশি হচ্ছে,এই পুজোকে কেন্দ্র করে আশেপাশের সকল মানুষ মেতে ওঠেন”।এই পরিবারের কন্যা প্রীতিকণা সাঁতরা জানান,” আমরা ছোটবেলা থেকেই এই রীতি দেখে আসছি আমার জন্মযাত্রী মা কালি রূপে পূজিত হয়,এই পুজোকে কেন্দ্র করে আমাদের খুবই আনন্দ উপভোগ হয়”। আগামী দিনে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই রীতি পালন হয়ে আসবে বলেই জানালেন পরিবারের সদস্যরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct