নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের বেহাল দশা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একদিকে শিক্ষক পদে নিয়োগে পাহাড় সমান দুর্নীতি, আর অন্যদিকে শিক্ষাঙ্গনে পড়াশোনার পরিবেশ ভূলুণ্ঠিত। এমতাবস্থায় স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া, পশ্চিমবঙ্গ শাখা শিক্ষায় সম-অধিকার, শিক্ষার সহজলভ্যতা এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সুদৃঢ়করণের দাবি জানাল। সংগঠন মনে করে যে, বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্নীতির আখড়াতে পরিণত করা হয়েছে। শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে অপরদিকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আসন সংখ্যা পূরণ হচ্ছে না। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সাইদ মামুন বলেন, একদিকে স্কুলগুলো যোগ্য শিক্ষকের অভাবে ভুগছে, অন্যদিকে শিক্ষা ব্যবস্থার বানিজ্যিকিকরণ চলছে। এইদিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে করোনা পরবর্তী সময়ে রাজ্যজুড়ে স্কুলছুট বৃদ্ধির জন্য সরকারি উদাসীনতাকে দায়ী করেন সাইদ মামুন। জামাআতে ইসলামী হিন্দের সম্পাদক শাদাব মাসুম বলেন, শিক্ষাঙ্গনে ধর্মীয় বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। হিজাব পরার জন্য নার্সিং পড়ুয়ারা মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে।তিনি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিকাঠামোর ভগ্নপ্রায় দশার জন্য সংখ্যালঘু দপ্তরের সমালোচনা করেন। সাইদ মামুন জাতীয় ও রাজ্যের শিক্ষা নীতির সমালোচনায় বলেন বলেন, “শিক্ষা নীতিতে শিক্ষায় সমঅধিকার ও নৈতিক মূল্যবোধের ব্যাপক অভাব লক্ষ্য করা যায়।”তিনি আরও বলেন, “মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার তিনবছর পরেও স্থায়ী ভিসি, পরীক্ষক ও অধ্যাপক নিয়োগ সম্বভ হলো না, পরিকল্পিত ভাবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়কে পঙ্গু করার প্রচেষ্টা চলছে।” সাধারণ জনগণকে সচেতন এবং সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আর্জি জানিয়ে এসআই যেসব দাবি তুলেছে সেগুলি হল, ১) এসএসসি, এমএসসি, সিএসসি, পিএসসি ও প্রাইমারিসহ অন্যান্য চাকরির শূন্যপদ পূরণে নিয়মিত ও দুর্নীতি মুক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে।
২) চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিস্পত্তি করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৩) শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষন নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪) মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজ্য ঘোষিত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
৫) উৎসশ্রীসহ প্রকল্পের পূর্নমূল্যায়ন করতে হবে।
৭) শিক্ষাঙ্গনে ধর্মীয় বৈষম্য দূর করতে হবে।
৮) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন চালু করতে হবে।
৯) রাজ্যে ছাত্র-যুবকদের যোগ্যতানুযায়ী স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
১০) প্রতিবছর জব ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
১১) অবিলম্বে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনোরিটি স্ট্যাটাস আইনগতভাবে সুনিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে ।
১২) জাতীয় ও রাজ্যের শিক্ষা নীতির পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
১৩) হোস্টেলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সহজলভ্য করতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct