সাদ্দাম হোসেন, জলপাইগুড়ি, আপনজন: সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে একের পর এক রিসোর্ট থেকে বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকেরা। একসময়ের জমজমাট পর্যটন স্থল এখন পর্যটক হীন। দেখলে মনে হবে, লকডাউন চলছে। প্রতিবছর পূজোর মরশুমে এই সময় গিজগিজ করে পর্যটকদের ভীড় ডুয়ার্সের মূর্তি লাটাগুড়ি চাপরামাড়ি এলাকায়। তবে এ বছর সিকিমের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আতঙ্কে পর্যটকরা আসছেন না ডুয়ার্সের এই সমস্ত এলাকায়। মূর্তি, চাপরামাড়ি ও লাটাগুড়ি এলাকা এক প্রকার জনশূন্য চেহারা নিয়েছে। খা খা করছে পর্যটনকেন্দ্র গুলি। অন্যান্য বছর এই সমস্ত জায়গায় গাড়ি রাখার জায়গা মিলত না, প্রতিটি রিসোর্ট পর্যটকে ঠাসা থাকতো। সেই জায়গায় এবছর অক্টোবর মাস পরলেও দেখা নেই, যারা রাজ্যের অন্যান্য প্রান্ত এবং দেশ-বিদেশ থেকে অনলাইনে বুকিং করেছিলেন তারাও বুকিং বাতিল করতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ রিসোর্ট পর্যটক শূন্য। ফোন করে আগে থেকে পূজোতে ঘুরতে আসার জন্য রিসোর্ট গুলি বুকিং করেছিলেন পর্যটকেরা, তা বাতিল করছেন এখন। যার কারনে চিন্তায় পড়েছেন রিসোর্ট মালিক থেকে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা। এমনটাই দাবি রিসোর্ট মালিক থেকে পর্যটন কেন্দ্রের আশপাশে থাকা ব্যবসায়ীদের। এমনকি জিপসি সাফারিতে ও নেই পর্যটক। এক প্রকার লকডাউনের চেহারা নিয়েছে ডুয়ার্সের মূর্তি এলাকা এমনটাই জানালেন পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে রিসোর্ট মালিকেরা।
মূর্তি থেকে টিকিট কেটে যে সমস্ত জায়গায় পর্যটকেরা জিপ সাফারি করেন সেই সমস্ত বনদপ্তর এর টিকিট কাউন্টার বন্ধ। কারণ পর্যটক নেই এমনটাই দাবি মূর্তি জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের। দূর দূরান্ত থেকে যেসব পর্যটকেরা প্রতিবছর পূজোর মুখে ডুয়ার্সে ঘুরতে আসেন সেই সমস্ত ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের সচেতন করতে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে বার্তা দিচ্ছেন। সিকিমের বিপর্যয় কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ডুয়ার্স। লাটাগুড়ি মূর্তি এই সমস্ত এলাকায় ঘুরতে এলে সমস্যায় পড়তে হবে না পর্যটকদের এমনটাই জানাচ্ছেন তারা।মূর্তি জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মজিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ডুয়ার্সে পূজোর সময় পর্যটকদের প্রচুর ভীড় থাকে। কিন্তু এবার সিকিমের বিধ্বংসী বন্যার প্রভাব ডুয়ার্সেও পরেছে। টুরিস্টরা ভাবছেন যেহেতু তিস্তা নদী জলপাইগুড়ি তথা ডুয়ার্সের বেশকিছু এলাকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে তাই ওনাদের মনেও একটা ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্ট গুলোতে প্রচুর পরিমানে বুকিং ছিলো কিন্তু এখন বেশিরভাগ বুকিং ক্যানসেল হচ্ছে।রিসোর্ট মালিক কিংশুক ব্যানার্জি বলেন, সিকিমের হড়পা বানের একটা কুফল আমরা পর্যটন ব্যবসায়ীরা ভোগ করছি। পর্যটকরা যথেষ্ট আতঙ্কিত যে ডুয়ার্সে আমরা কি অবস্থায় আছি। তারা ভাবছেন এখানকার পরিস্থিতি ঠিকঠাক আছে কি না। যারফলে এখানে যতগুলো বুকিং ছিলো তার প্রায় ১০০শতাংশ বাতিল হয়েছে। এখানে মূর্তির পূর্ব প্রান্ত বলুন আর পশ্চিম প্রান্ত বলুন কোনো রিসোর্টেই বুকিং নেই। এখানে রিসোর্ট মালিকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাথে যারা গাড়ির মালিকদেরও ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। সিকিম ও কালিম্পং এ হড়পা বানে ক্ষতি হয়েছে আর জলপাইগুড়ির যে অংশটায় তিস্তা নদীতে জল বেড়েছে সেখানে সামান্য ক্ষতি হয়েছে কিন্তু কারও মৃত্যু হয়নি। কিন্তু মানুষজনের কাছে এই তথ্য পৌছায়নি, তারা ভাবছেন হয়তো ডুয়ার্সে আসলে আমরা খুব বিপদে পরে যাবো। কিন্তু আমি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে সব পর্যটকদের বার্তা দিতে চাই যে, ডুয়ার্সের অবস্থা এখনও আগের মতোই আছে। পর্যটকরা ডুয়ার্সে আসলে নির্দ্বিধায় ঘুরতে পারবেন। এখানকার অবস্থা আগের মতোই আছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct