আপনজন ডেস্ক: এক দশক পরেও, মুজাফফরনগর দাঙ্গার শিকার হওয়া মানুষজন এখনও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ জেলার তাদের নিজ গ্রামে ফিরে যেতে পারেনি, কারণ বেঁচে যাওয়া অনেক লোক সহিংসতায় জড়িতদের কাছে তাদের বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে।হিন্দি দৈনিক ভাস্করকে দেওয়া ভুক্তভোগীদের বিবরণ অনুসারে, তাদের কাছে অত্যন্ত কম দামে তাদের বাড়ি বিক্রি করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীরা তাদের ফিরে আসা মেনে নিতে রাজি নয়।২০১৩ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মুজাফফরনগর ও শামিলিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ৬২ জনের মৃত্যু হয় এবং ৬০,০ এরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান।
লোই গ্রামে বসবাসরত চল্লিশ বছর বয়সী গুলফাম জানান, স্থানীয় লোকজন নোটারির উপস্থিতিতে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করায় তিনি তার বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হন। অনেকেই তা অনুসরণ করতে বাধ্য হন। ফলস্বরূপ, ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়িগুলি স্থানীয়রা ৩০,০ থেকে ১.৪৫ লক্ষ পর্যন্ত কম দামে কিনেছিল। এক দাঙ্গাগ্রস্ত বলেন, আমাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সাহস নেই। গ্রামের কেউ আমাদের ফিরে যেতে চায় না। উভয় জেলায় এ ধরনের ৫০টি গ্রাম রয়েছে।ভাস্করের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও ২০,০০০ পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্য গ্রাম এবং নির্জন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। আট হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই বাড়িগুলি এখন এমন লোকদের মালিকানাধীন যারা মূল অধিবাসীদের প্রতি বৈরী ছিল।
সহিংসতার ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে ৫৮ বছর বয়সী নাফেদিন বলেন, ‘আমরা সেই দিনগুলোর কথা ভেবে কাঁপছি। ৭ ই সেপ্টেম্বর রাতে আমাদের দুর্ভাগ্য হয়েছিল যখন সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে শিশু ও মহিলাদের নিয়ে পালাতে হয়েছিল।
৪৩ বছর বয়সী শৌকিন এখন কাকরা গ্রামে থাকেন। তিনি বলেন, তার পাঁচ ভাইয়ের বাড়ি মাত্র ১.৮০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। ১০ বছর পরও তাই গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct