হরিয়ানার নূহ জেলায় গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্রজমণ্ডল যাত্রাকে কেন্দ্র করে সংহিংসতার পর হরিয়ানা প্রশাসন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয় একের পর এক বাড়ি। সেই ঘটনার প্রায় এক মাস পরে হিন্দি দৈনিক ভাস্কর-এর সাংবাদিক শিবাঙ্গ সাক্সেনা-র অন্তর্তদন্তমূলক রিপোর্ট ‘আপনজন’-এ তুলে ধরা হল।
রোহিঙ্গা কলোনিতে পুলিশ দুই নাবালকসহ ৪ জনকে তুলে নিয়ে গেছে। হুরজার বাড়ির পেছনে রোহিঙ্গা কলোনি। এখান থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। মাহবুর রহমান ও সাইফ উল্লাহ ছাড়াও দুই নাবালক রয়েছে। পাশেই ১৭ বছরের জামাল ও ১৩ বছরের আবদুলের বাড়ি। পুলিশ জানায়, ৩১ জুলাই দাঙ্গাস্থলে এই চারজনের মোবাইলের অবস্থান পাওয়া গেছে।আবদুলের বাবা জব্বার বলেন, ৩১ জুলাই সহিংসতার পর পুরো কলোনি সিল করে দেওয়া হয়। দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে। সব জায়গায় পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। ৩ আগস্ট, বলা হয়েছিল যে কেউ রেশন বা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাইরে যেতে পারেন।৭ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে আবদুল ও জামাল একসঙ্গে চাল সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে পুলিশ তাদের নিয়ে যায়। বিষয়টি আমরা এলাকার লোকজনের কাছ থেকে জেনেছি। ৪ দিন বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ১০ আগস্ট শুনানি ছিল, তারপর ফোন আসে। সেখানেও আমাদের দুই ছেলের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। (আবদুল ও জামালের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।) একই কলোনিতে বসবাসরত মোহাম্মদ আলমের ছেলে রেহমানকে গত ৪ আগস্ট গ্রেফতার করে পুলিশ। রেহমান দিল্লির একটি এনজিও ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ অর্থাৎ DAJI-তে কাজ করতেন। DAJI জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনার (UNHCR) এর সাথে কাজ করে।মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘আমার ছেলে কলোনিতে এনজিওর কাজ সামলাত। ৩১শে জুলাই তিনি তখনও অফিসের কাজ করছিলেন। দাঙ্গার দিন রহমান তাদের কাজ করছিলেন বলেও এনজিও লিখিতভাবে জানিয়েছে।মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘৪ আগস্ট সিভিল ড্রেসের দুজন পুলিশ এসে বলল রেহমানকে নিয়ে যেতে হবে। তার মোবাইল ও ল্যাপটপ চেক করাতে হবে। তদন্ত শেষে রেহমানকে এখানে রেখে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি ফিরে আসেননি। আমি সারা রাত প্রতিটি থানায় ঘোরাঘুরি করতে থাকি।আমরা রোহিঙ্গা কলোনি থেকে ফিরোজপুর ঝিরকা পৌঁছেছি। এখানে বসবাসকারী অ্যাডভোকেট ইউসুফ খান বলেন, ‘ফিরোজপুর ঝিরকায় একটি মাত্র এফআইআর হয়েছে। এতে অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। দাঙ্গার দিন তিনি একটি বাইক পুড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।নাগিনা গ্রাম থেকে ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এরা সবাই দরিদ্র পরিবারের। ওয়াহিদার ছেলে আরশাদকে আটক করেছে পুলিশ। ওয়াহিদা বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার তিন ছেলে বাড়িতেই ছিল। তখন একটি ছেলের ফোন আসে যে দাঙ্গা শুরু হয়েছে। আমি দরজা বন্ধ করে সবাই ভিতরে বসলাম। ১৭ আগস্ট রাতে আরশাদ বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। পুলিশ ঢুকে তাকে একই অবস্থায় তুলে নিয়ে যায়। আমি তাকে থামানোর চেষ্টা করলে সে আমাকেও ধাক্কা দেয়।১৫ আগস্ট নাগিনার বশির আহমেদের ছেলে নাসির হোসেনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। নাসিরের স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বশির বলেন, ‘গ্রামের চত্বরে নাসিরের মোবাইলের দোকান আছে। সকালে তিনি সেখানে যান। নূহের দাঙ্গা হলে তিনি সরপঞ্চকে নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে এসেছিলেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct