সেখ রিয়াজুদ্দিন, বীরভূম, আপনজন: সদ্য সমাপ্ত হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর্ব থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত শাসক দল, রাজ্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সম্মিলিত কদর্য পরিকল্পনায় রাজ্য প্রত্যক্ষ করলো এক রক্তাক্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন।যার প্রেক্ষিতে নির্বাচন ঘিরে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। এবিষয়ে রাজ্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন নির্বিকার। রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ভোটকর্মীরা। ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েও নির্বাচন কমিশন সে কথা রাখেন নি। অবাধ, সুষ্ঠু ,নিরপেক্ষ নির্বাচন তো দূরের কথা নির্বাচন কমিশন একতরফা ভোট করতে শাসক দলকে সাহায্য করেছে নির্লজ্জ ভাবেই। আর এটা করবে বলেই তারা কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্বেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো আটকাতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। সন্ত্রাস শুধু তৃণমূল দল করে নি, এই সন্ত্রাসে মদত দিয়েছে প্রশাসনের একটা বড়ো অংশ। রাজ্য প্রশাসনের উপর কোনো ভরসা ছিলো না বলেই প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবী জানানো হয়। রাজ্যের অধিকাংশ বুথেই শাসকের পক্ষে ভোট করিয়ে দেবার জন্য চাপ দেওয়া হয় নির্বাচন কর্মীদের। চাপ দেয় একটা অংশের পুলিশ ও আমলারা। আজ আদালতে বিচারকের সামনে বি ডি ও দের তাই গলা কাঁপছে। শাসক দল ও প্রশাসনের এই চাপ নিতে না পারায় মৃত্যু হয় নদীয়া জেলার প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কর্মরত শিক্ষক রেবতী মোহন বিশ্বাসের। এ মৃত্যুর দায় নির্বাচন কমিশনকেও নিতে হবে। দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। নির্বাচন কমিশনের এই ব্যর্থতার প্রতিবাদেই রাজ্য জুড়ে পালিত ধিক্কার কর্মসূচীর অঙ্গ হিসাবে ১২ ই জুলাই কমিটির উদ্যোগে সিউড়িতে পালিত হয় ধিক্কার মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি। এদিন বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরিউক্ত কথাগুলো বলেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সভায় বক্তব্য রাখেন রাজ্য কোর্ডিনেশন কমিটির জেলা সম্পাদক সৌমেন চক্রবর্তী,এ বি পি টি এর জেলা কোষাধ্যক্ষ আশিস গড়াই।তিনি আরও বলেন, নিষ্ঠুর অমানবিক মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে প্রয়াত হয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কর্মরত শিক্ষক। নির্বাচনকে সম্পূর্ন প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। আজকে কারচুপির দায় চাপানো হচ্ছে কর্মচারীদের উপর। প্রাকৃতিক দূর্যোগ উপেক্ষা করে অনুরূপ বোলপুরেও বিক্ষোভ সভায় শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী, অধ্যাপক, সাংস্কৃতিক কর্মীদের অংশ গ্রহন ছিলো উল্লেখযোগ্য। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সভায় উপস্থিত ছিলেন, এ বি টি এ র কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য সুদীপ্ত আচার্য, জেলা শাখার সদস্য সুশ্রুত রজক, রাজা ভট্টাচার্য, তৌফিক জামান চৌধুরী, মহকুমা নেতৃত্ব সব্যসাচী নায়েক, সুকোমল শীল প্রমুখ নেতৃত্ব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct