আজিজুর রহমান, গলসি, আপনজন: গলসিতে রেল দুর্ঘটনায় মৃত পিন্টু চ্যাটার্জির বাড়িতে সমবেদনা জানাতে গেলেন এলাকার ইমাম ও মাওলানারা। এদিন তাদের কল্যাণের শপথ নামক সংগঠনের সদস্যরা তার বাড়িতে গিয়ে পরবর্তীতেও পাশে থাকার আশ্বাস দেন। জানা গেছে, গত ২৭ মে বর্ধমান স্টেশনে ট্রেনে উঠতে গিয়ে নিচেই পরে জখম হন গলসির চৌমাথার বাসিন্দা পিন্টু চ্যাটার্জি। তারপর তাকে প্রথমে বর্ধমান ও পরে কলকাতায় চিকিৎসা করানো হয়। খরচ ব্যায়বহুল হওয়ায় ভর্তির পর থেকেই অর্থ সংকট দেখা দেয়। অর্থ সংকট দুর করতে পরিবারটিকে সাহায্যের আবেদন নিয়ে এগিয়ে আসে কল্যাণের শপথ নামক তাদের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা সাহায্য চেয়ে স্যোশাল মিডিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেন। এরপরই বহু মানুষ অর্থ দিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ান। তার চিকিৎসার খরচ দাঁড়ায় ২৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার কাছাকাছি। তবে সকলের প্রচেষ্টাকে ব্যার্থ করে গত শুক্রবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ মারা যান পিন্টু চ্যাটার্জ্জী। তারপর শনিবার রাত দশটা নাগাদ তার মরদেহ আসে চৌমাথার বাড়িতে। এরপরই রবিবার সকালে কল্যাণের শপথ এর সদস্যরা পিন্টুর বাড়িতে যান। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রতিবেশী অরিন্দম নন্দী জানান, কল্যাণের শপথ যা করেছে সেটা তাদের সারাজীবন মনে থাকবে। তবে পিন্টুর মতো ভাগ্য যেন আর কারও না হয়। বছর খানেক আগে বড় মেয়ে মারা গেল। বাড়িতে বৃদ্ধা মা ও একটা আট মাসের বাচ্চা আছে। যা অর্থ কড়ি ছিল সবকিছু শেষ। পিন্টুর দিদি সোমা দেবনাথ বলেন, মাওলানা সাহেবরা যা করেছেন তা কখনই ভোলার নয়। বহু মানুুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন সবকিছু শেষ হয়ে গেল। পিন্টুর ছোট্ট মেয়েটার কি হবে? কল্যাণের শপথ এর সদস্য হাজী মহববুল হক বলেন, এত টাকা একটা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে বের করা অসম্ভব। আমরা ওদের ফোন পে ও একাউন্ট নম্বর দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন করেছিলাম। তারপর বহু মানুষ পাশে এসেছেন। তবে এখন বাড়িতে গিয়ে দেখলাম, যা সেটা খুবই কষ্টের। তার একটি ছোট্ট আট মাসের বাচ্চা আছে। যাতে ওর পরিবারটি ভবিষ্যত গড়া যায় তার জন্য সরকার, রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct