নিজস্ব প্রতিনিধি, ভাঙড়, আপনজন: মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার কার্যত রনক্ষেত্রর চেহারা নিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় । আইএসএফ এক কর্মী বাহারুদ্দিন মোল্লা গুলিবিদ্ধ হন । তার পেটে গুলি লেগেছে ।তাকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । মঙ্গলবার সকাল থেকেই কার্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা ভাঙড় । বিডিও অফিসের সামনেই বোমার গর্জন, চলেছে ‘গুলি’ও। লাঠি, বাঁশ নিয়ে চলল বেধড়ক মারধর। হল ইটবৃষ্টি, ছোড়া হল টিয়ার গ্যাসের সেল। মনোনয়ন ঘিরে একেবারেই উত্তপ্ত ভাঙড় । কোথায় ১৪৪ ধারা? কোথায় নিরাপত্তা? কী-ই বা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন? ভাঙড়ে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। মঙ্গলবার সকালে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান আইএসএফ এর প্রার্থীরা। অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনেই তৃণমূল কর্মীরা জমায়েত করে ছিলেন। আইএসএফ কর্মীরা আসতেই ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। মুড়িমুড়কির মতো বিডিও অফিসের সামনে চলতে থাকে বোমাবাজি।এমনিতেই মনোনয়ন কেন্দ্রের এক কিলোমিটারের রেডিয়াসের মধ্যে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাকে নস্যাৎ করেই সেখানে তৃণমূল কর্মীরা বাঁশ হাতে ‘প্রহরা’য় ছিলেন বলে অভিযোগ। আর আইএসএফ প্রার্থী সহ কর্মীরা এসে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আনার প্রানপন চেষ্টা করে। ক্যামেরায় ধরা পড়ে, এক আইএসএফ কর্মীকে ধরে টেনে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি ক্যামেরার সামনে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি আইএসএফ কর্মী । মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর সামনেই বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। তাঁর কথায়, ” টিএমসি-রা আমায় গুলি করছে স্যর, আমার ক্যান্ডিডেটকে মারছে স্যর। আমি আর কী করব! ওরা প্রচণ্ড বোমা-গুলি চালাচ্ছে । এতটাই বোমাবাজি হয়, বিডিও অফিসের সামনে কার্যত কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী । তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “আইন লঙ্ঘন হোক, এরকম কোনও কাজ আমরা করব না। কিন্তু যারা অশান্তি করছে, মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছে না, তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এটাই আশা করছি। তৃণমূল তো বোমা-গুলি-পিস্তল নিয়ে তৈরি, যাতে আমরা এলেই হামলা চালায়।” এককথায় ভাঙড় কার্যত রণক্ষেত্র। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হচ্ছে, সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুল ইসলামের গাড়ির ড্যাশবোর্ড থেকে বোমা উদ্ধার হয়। যদিও আরাবুল ইসলামের ছেলে দাবি করেন ,তিনি মনোনয়ন গ্রহণ কেন্দ্রের এক কিলোমিটার দূরে গাড়ি রেখেছিলেন। আইএসএফ এর সমর্থকরা তার গাড়ির মধ্যে এই বোমা রেখে গিয়েছিল চক্রান্ত করে। আরাবুলের ছেলে দাবি করেন, প্রচুর পরিমাণে পুলিশ অশান্তি ঠেকাতে সকাল থেকে প্রচুর পরিমাণে ছিল ।কিন্তু যেভাবে পুলিশের উপরে গুলি ও বোমা আইএসএফ সমর্থকরা ছুঁড়তে থাকে তাতে পুলিশ বাধ্য হয়েছে পিছু হটতে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct