সাইফুল লস্কর, বারুইপুর: ফের কর্নাটকের ছায়া এ রাজ্যে। বারুইপুরের পদ্মপুকুর হাই স্কুলে হিজাব পরে স্কুলে আসায় ছাত্রীদের হেনস্থার শিকার হতে হযেছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখালেন স্কুলের সামনে। কয়েকজন অভিযোগ, এক শিক্ষক স্কুলে তাদের হিজাব পরে আসতে বারণ করেন। কিন্তু শিক্ষকের মৌখিক নির্দেশে উপেক্ষা করে তারা স্কুলে এলে তাদেরকে ওই শিক্ষক বেত্রাঘাত করেন বলে অভিযোগ। ছাত্রীরা স্থানীয় খোদারবাজার গ্রামের বাসিন্দা। ছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের জানালে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপর অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা এসে পদ্মপুকুর হাই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তারা দাবি করেন, এই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক কমলকান্তি মণ্ডলকে ক্ষমা চাইতে হবে। সেই সঙ্গে ওই শিক্ষককে সাম্প্রদায়িক আচরণের জন্য বহিষ্কারেরও দাবি জানান তারা। তাদের দাবি, এই স্কুলের এক বড় অংশের ছাত্রছাত্রী সংখ্যালঘু। আগে শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্যমূলক বা হিজাব বিরোধী মনোভাব দেখা যায়নি। হঠাৎ এই ঘটনাকে তারা সম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন। এ নিয়ে রমযান মাসের প্রথম দিনে বারুইপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রের স্কুলের উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার খবর খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও বারুইপুর থানার আইসি সৌম্যজিত রায় দ্রুত সেখানে হাজির হন। তারা অভিভাবক ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। অবশেষে ওই অভিযুক্ত শিক্ষক কমলকান্তি মণ্ডল এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা স্বীকার করেন। এরপর পরিস্থিতি ক্রমশ শান্ত হয়। তবে এই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য ন্ট্যান্ড ফর জাস্টিস ফোরাম অব ওয়েস্টবেঙ্গল নামে এক সামাজিক সংগঠনের সদস্য এগিয়ে আসেন। সংগঠনের সম্পাদক সম্পাদক মুস্তাহিদ আল-সাফি মিদিআন সহ এক প্রতিনিধি দল বারুইপুর থানার আইসির সঙ্গে দেখা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অভিযোগ তুলে থানায় এফআইআর দায়ের করেন। শিক্ষকের বরখাস্তও দাবি করেন। তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়্লোকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নশ্ট করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে। এরপর বারুইপুর পদ্মপুকুর হাই স্কুলে হিজাব পড়ে স্কুলে যাওয়ায় ছাত্রীরা নির্যাতনের শিকার ।এমনই বিরল ঘটনার সাক্ষী বারুইপুর কাছারী বাজার সংলগ্ন পদ্মপুকুর হাই স্কুলে এমনকি হিজাব পড়ার কারণে এক ছাত্রীর উপর অমানবিক বেত্রাঘাতকরা হয় !
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম কমলকান্তি মন্ডল,দীর্ঘদিন যাবৎ হিজাব পরিহিতা কয়েকটি ছাত্রীর উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন এবং তাদের কে হিজাব পড়ে আসতে নিষেধ করেন। পদ্মপুকুর হাই স্কুলের যে ছাত্রীরা নির্যাতনের শিকার হয়ছে তারা যে শ্রেণিতে পরে তারা হলো ষষ্ঠ,সপ্তম,নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলের স্হানীয় সংখ্যালঘু ছাত্রীর সংখ্যা নিহাত কমনয় তাই অভিযুক্ত শিক্ষক যে ভাবে অমানবিক বেত্রাঘাত করেন। সে কারনে ছাত্রীরা ভয় পেয়ে তারা তাদের অভিভাবকে বিষয়টি জানাই। তারা ভয় পেয়ে স্কুলে যেতে সঙ্কোচ বোধ করে। অভিভাবকরা তারা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ জানাই। স্ট্যান্ড ফর জাস্টিস ফোরাম অব ওয়েস্টবেঙ্গল সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। কাউন্সিলর এবং বারুইপুর থানার আই সি সৌম্যজিত রায়য়ের কাছে লিখিত এফআইআর করা হয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
সংগঠনের সম্পাদক মুস্তাহিদ আল-সাফি মিদিআন বলেন অভিযুক্ত শিক্ষককে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এবং অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাসপেন্ড করতে হবে তা নাহলে আমাদের আন্দোলন আরও বৃহত্তম হবে। এইভাবে পশ্চিমবাংলার বুকে এমন ঘটনা প্রায় বিভিন্ন স্কুলে দিনের পর দিন হিজাব পরিধানকারী সালিন পোশাকের ছাত্রীরা নির্যাতনের শিকার না হতে হয়,সে দিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রতিবাদমুখর জনতার কাছে অভিযুক্ত শিক্ষক ক্ষমা শিকার করেন। এই অভিযুক্তদের শাস্তির ধরন কঠিন না হলে বিষয়টি লঘু আকারে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে তাই শুধু নাটকীয় ক্ষমাপ্রার্থনা এটার সমাধান হতে পারেনা, হিজাব মুসলিম মহিলাদের ধর্মীয় বিধি এবং সাংবিধানিক অধিকার তাই বিষয়টির সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়। এছাড়াও আজ স্কুলের গেটের সামনে ক্ষিপ্ত জনগণের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো, তাদের একটাই দাবি অভিযুক্ত শিক্ষকের সাস্পেন্সন চাই।এছাড়াও সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জুলফিকার মিস্ত্রী,সাজিদ লস্কর,সাহির আহমেদ,রামিজ লস্কর,সামিম লস্কর,মহঃ সাহরিমান, রোজিন রহমান,সেখ সোহরাফ প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct