সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: প্রায় শিল্প বিহীন কৃষি নির্ভর লাল মাটির জেলা বাঁকুড়ার অন্যতম অর্থকরী ফসল আলু। ঋণ করে আলু বসানোর কাজ করেছিলেন এই জেলার চাষিরা। কিন্তু বর্তমান সময়ে উৎপাদিত এই ফসলের ‘দাম না থাকা’য় চরম সমস্যায় এই জেলার একটা বড় অংশের কৃষিজীবি মানুষ। প্রসঙ্গত, রাজ্যে তৃতীয় আলু উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে বাঁকুড়ার। এই জেলার কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস, পাত্রসায়ের, বিষ্ণুপুরের পাশাপাশি দক্ষিণের তালডাংরা, সিমলাপাল, রাইপুর ও সারেঙ্গা ব্লক এলাকায় প্রচুর পরিমানে আলু চাষ হয়। চলতি বছরে বাঁকুড়া জেলায় এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ পাঁচ হাজার একর জমিতে আলু চাষ হয়েছে বলে খবর। আলু চাষে একজন চাষীর একর প্রতি খরচ হয়েছে ৬২ হাজার টাকার বেশী। কিন্তু ঐ জমিতে উৎপাদিত আলুর দাম মিলছে ৪৮ হাজার টাকা মাত্র। ফলে ১৪ হাজার টাকা একর প্রতি ক্ষতি হচ্ছে। বেশীরভাগ কৃষক বিভিন্ন সমবায় প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন, কেউ কেউ ব্যক্তিগত ঋণও নিয়ে থাকেন। কিন্তু চলতি বছরে উৎপাদিত আলুর দাম না পাওয়ায় আঞ্চলিক অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। ফলে বেঁচে থাকাই দূষ্কর। তাই তাদের সমস্যা সমাধানে সরকারি সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করে আগের মতো বেনফেড, কনফেড, ইসিএসের মাধ্যমে সরাসরি চাষির কাছ থেকে আলু কেনার দাবি জানাচ্ছেন তারা। কোতুলপুর এলাকার আলু চাষি রামকৃষ্ণ দে, শিশির নেমো, মীরা মণ্ডল মণ্ডল’রা বলেন, এবছর আলু চাষ করে মহা সমস্যায় পড়েছি। ঋণ করে আলু চাষ করেছিলাম, ফসল যখন ঘরে উঠলো আলুর দাম নেই! যা অবস্থা ঐ ঋণের টাকা শোধ করাই দূস্কর! এই অবস্থায় কিভাবে তাঁরা খেয়ে পরে বেঁচে থাকবেন ভেবে উঠতে পারছেননা বলে জানান। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি বিভাস দে বলেন, আঞ্চলিক ও গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি কৃষি ও কৃষক। আমরাও আলু চাষীদের দাবিকে সমর্থণ জানাই। তাঁরা সংগঠনগতভাবে আলু চাষীদের পাশে আছেন। আলুর সহায়ক মূল্য নির্ধারণ, আলু রফতানির ব্যবস্থা করা সহ বিভিন্ন দাবি তারা কৃষি মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বলে জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct