আপনজন ডেস্ক: ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনে ১৭টি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে। তাতে, বামেদের সাথে জোট নিয়ে জট তৈরি হয়েছে। কারণ, বামেরা কংগ্রেসের জন্য ১৩ টি আসন ছেড়েছিল। এ-বিষয়ে বামফ্রন্টের আহবায়ক নারায়ণ কর বলেন, আসন নিয়ে কংগ্রেসের সাথে আজ রাতে পুনরায় আলোচনা হবে। তাঁদের বিবেচনার জন্য আবেদন জানাবে বামফ্রন্ট। আগামীকাল দুপুরের চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যাবে। আজ এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক মুকুল ওয়াসনিক এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। কংগ্রেসের ১৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি জানান, মোহনপুরে প্রশান্ত সেন চৌধুরী, বড়জলা শিষ্ট মোহন দাস, আগরতলা সুদীপ রায় বর্মণ, টাউন বড়দোয়ালি আশীষ কুমার সাহা, বনমালিপুর গোপাল রায়, মজলিশপুর কেশব সরকার, বাধারঘাট রাজ কুমার সরকার, সূর্যমনিনগর সুশান্ত চক্রবর্তী, চড়িলাম অশোক দেববর্মা, তেলিয়ামুড়া অশোক কুমার বৈদ্য, রাধাকিশোরপুর টিটন পাল, মাতাবাড়ি প্রণজিত রায়, কমলপুর রুবি গোপ, করমছড়া দিবা চন্দ্র রাঙ্খল, পাবিয়াছড়া সত্যবান দাস, কৈলাসহর বীরজিৎ সিনহা এবং ধর্মনগরে চয়ন ভট্টাচার্য প্রার্থী হয়েছেন। কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বামফ্রন্টের আহবায়ক নারায়ণ কর বলেন, বিজেপি-কে হারাতে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত হয়েছি। তাই, কৈলাসহরে সিপিএমের বর্তমান বিধায়ক মবস্বর আলীকে প্রার্থী না করে কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। তার পরিণাম সিপিএমের লোকসানের হবে, জেনেও ওই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে কংগ্রেসের এই প্রার্থী তালিকা বিবেচনা প্রসূত হয়নি, ক্ষোভের সুরে মন্তব্য করেন তিনি। তার বক্তব্য, আজ আসন নিয়ে কংগ্রেসের সাথে পুণরায় বৈঠকে বসবে বামফ্রন্ট। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে আগামীকাল দুপুরের মধ্যে চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যাবে, আশা প্রকাশ করে বলেন তিনি।অন্যদিকে, শনিবার বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে জানানো হয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়বেন না।
বিপ্লব দেব ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী। তাকে রাজ্যসভার সংসদ সদস্য করায় এবার এই পদে আনেনি বিজেপি। ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর ২০১৮ সালে সিপিএম নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বিদায় নেন। এরপর বিপ্লব দেব ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বিদায় নেন গত বছরের ১৪ মে। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তিনি সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্য হন। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভার ৬০টি আসনে নির্বাচন। সিপিএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের ত্রিপুরার ধনপুর আসন থেকে এবার প্রার্থী করা হয়েছে কৌশিক চন্দকে। তবে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী সাব্রুম। তিনি বলেন, মানিক সরকার দলের পলিটব্যুরোকে আগেই জানিয়েছেন, তিনি এখন সংগঠনকে আরও সময় দিতে চান।তাই, তাকে নির্বাচনে প্রার্থিতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচনে এবার সিপিএম-কংগ্রেস জোট হয়েছে। সিপিএম রাজ্যের ৬০ আসনের মধ্যে ৪৬টিতে প্রার্থী দিয়েছে। একটি আসন বাম–সমর্থিত নির্দল প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে। আর ১৩টি আসন দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। সিপিএমে এবার প্রার্থীদের ২৪ জনই নতুন মুখ। বিজেপিও আজ প্রথম দফায় ৫৯ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে নাম নেই বিপ্লব দেবের। তিনি ছিলেন এই রাজ্যে কংগ্রেস ও বামপন্থীদের বাইরে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পর তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে তখন আলোচনা ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct