নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা, আপনজন: চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এসএসসির নিয়োগ-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ে। সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির হেড কোয়ার্টার এসএসসি অফিস। ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে এসএসসি অফিসের তিনতলায়। জানা গেছে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি এবং শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার মোট ২৩ লক্ষ ওএমআর শিট এসএসসি অফিসে রয়েছে। ওই ওএমআর শিট খতিয়ে দেখার টেন্ডার পেয়েছিল উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের উত্তরপত্র মূল্যায়নকারী সংস্থা নাইসা। ওই সংস্থার প্রাক্তন আধিকারিক পঙ্কজ আগরওয়ালকে জেরা করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়। ওই সংস্থার মাধ্যমে ওএমআর শিট স্ক্যানিং করা হয় এসএসসি অফিসের তিনতলায়। ওই সংস্থার কাছে ওএমআর শিটের নম্বর সঠিক রয়েছে। তবে এসএসসি অফিসের সার্ভারে ওএমআর শিটের কারচুপি করা হয়েছে। সেখানেই বাড়ানো হয়েছে নম্বর। একথা আগে হাইকোর্টকে জানায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই রিপোর্টে আরও জানায়, এখনও পর্যন্ত ৮ হাজার ১৬৩টি ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে। এসএসসি সুপারিশ অনুযায়ী ২৩ হাজার ৪৪৯জন চাকরি পেয়েছেন। তাঁরা এখনও কাজ করছেন। অর্থাৎ ৩০ শতাংশের চাকরি হয়েছে বেআইনিভাবে। এসএসসি অফিসে বসে কীভাবে অগুনতি ওএমআর শিটের নম্বর বাড়ানো সম্ভব? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই দুর্নীতির সঙ্গে প্রায় সকলে জড়িত বলেই মনে করা হচ্ছে। নইলে এত বড় অপরাধ সম্ভব নয় বলেই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। অবশ্য দিন কয়েক আগে, ২১ হাজার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে সিবিআই সিট জানিয়েছিল। এছাড়া, ৪০ জনের নম্বর অনৈতিকভাবে বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেই ‘বিকৃত’ ওএমআর শিটগুলি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপলোড করার নির্দেশ দেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন বিচারপতির নির্দেশ মেনে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে চাকরি পাওয়া ওই ৪০ জনের ওএমআর শিট তারপরই আপলোড করে। তাতে বিকৃত করার স্পষ্ট চিহ্ন ফুটে ওঠে বলে অভিযোগ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct