মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: বর্ধমান শহরের রানীগঞ্জ চৌমাথার কাছে প্রাচীন মসজিদ “মদিনা মসজিদ”। এর আগে দক্ষিণ দিকে মক্কা মসজিদের বিষয়ে জানিয়েছিলাম। এই দুটি মসজিদ ঠিক যেমন জমজ ভাই তেমনি যুগ্ম মসজিদ। হুবহু এক দেখতে ওই একই রকম ,এক গম্বুজ, চারটি মিনার, উত্তর দক্ষিণে জানলা, পূর্বে দরজা, চুন সুরকির দেওয়াল, ছিল। এই মসজিদটিও প্রায় ৩০০ বছরের পুরাতন, ওয়াকফ বোর্ডের ইসি নাম্বার ৯৩০/১৯৩৯ সাল। ওয়াকফ বোর্ডের রেকর্ড অনুযায়ী এই মসজিদটির নাম “রানীগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ”। বর্তমানে কোনও মুসলিম বসবাস নাই, অতীতে ছিল। এই মসজিদটি বেশ কয়েক বছর আগে বর্ষার সময় রক্ষণাবেক্ষণার অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় ভেঙে পড়ে। বর্ধমানবাসী ও লস্কর দিঘির মানুষের সহায়তায় নতুন করে মসজিদ তৈরি হচ্ছে। এই মসজিদটির বৈশিষ্ট্য এই যে বর্ধমানে একমাত্র এই মসজিদটি পরপর তিনজন মোতোয়াল্লি মহিলা পরিচালনা করেছেন ১৯৩৪ সালের আগেই। আন্না বিবি, মাতু বিবি, চুন্নু বিবি। আব্দুল গফফার ১৯৩৪ সালে ওয়াকফ বোর্ডে এনরোলমেন্ট করান (দাগ নাম্বার ১৫০৯ পরিমাণ ৯৪ ছটাকএবং ১৫১০ দাগ নাম্বার ২৭ ছটাক। উভয় দাগ দুটি সিএস রেকর্ড অনুযায়ী। ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ শাসিত ওয়াকফ বোর্ডে নথিভুক্ত হয়। ১৯৪১ সালে পনেরশো নয় দাগটি বেহাত হয়ে যায়, যা আজও কোর্টে বিচারাধীন। হাজী ইসমাইল (লস্কর দীঘি) ১৯৬০ সালে মসজিদের মোতোয়াল্লি হন এবং ২০১৩ পর্যন্ত আমৃত্যু মতোয়াল্লী ছিলেন। তারপর হাজী ইয়াসিন আজ পর্যন্ত দায়িত্বে আছেন। রানীগঞ্জ বাজারে এত সুন্দর প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদটির কাঠামো সংস্কারের কথা কেউ চিন্তা করেনি। এই প্রাচীন হেরিটেজ মসজিদ গুলি বাঁচাতে পারলে আগামী দিন গবেষণার বিষয়বস্তু হয়ে উঠতো।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct