সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া: শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের পাঁচটি ক্লাস মিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা মোট ৩৫ জন। তাদের পঠন পাঠনের ভার একমাত্র শিক্ষিকার উপর। এতদূর পর্যন্ত না হয় মেনে নিয়েছিলেন অভিভাবকরা। কিন্তু কেন্দ্রের মূল ভবনের যে হাল তাতে শিশুদের সেখানে পাঠিয়ে আর কোনোভাবেই নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন না অভিভাবকরা। কারন গোটা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রই যে পরিনত হয়েছে কার্যত মরণফাঁদে। ঘটনা বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের গঞ্জেরডাঙ্গা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের। বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের প্রত্যন্ত গঞ্জেরডাঙ্গা গ্রামে স্কুলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ২০০২ সালে একটি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করে শিক্ষা দফতর। তিনটি ক্লাসরুমের পাকা স্কুল ভবন তৈরী হয়।
পরবর্তীতে স্কুলে তৈরি হয় আজবেস্টাসের মিড ডে মিল শেড। কিন্তু নির্মানের মাত্র কুড়ি বছরেই সেই স্কুল ভবনের হাল রীতিমত দফারফা। বছর দু তিন আগেই পাকা স্কুলভবনের বেশিরভাগ নির্মানই ভেঙে চুরে একাকার হয়ে যায়। স্কুল ভবনের দেওয়াল জুড়ে তৈরী হয় মস্ত বড় বড় ফাটল। মিড ডে মিলের শেডের আজবেস্টাসও ভেঙেচুরে যায়। বারবার শিক্ষা দফতরকে জানিয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ায় আসল স্কুল ভবন ছেড়ে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনের জন্য শিক্ষিকা বেছে নেন মন্দের ভালো মিড ডে মিলের শেডকেই। ভাঙাচোরা সেই শেডের তলায় রোদ বৃষ্টি ঝড়ে ৫ টি ক্লাসের ৩৫ জন পড়ুয়াকে একসাথে গাদাগাদি করে বসিয়ে কোনোমতে পঠন পাঠন চালিয়ে যাচ্ছেন একমাত্র শিক্ষিকা। ভারী বৃষ্টি হলে শেডের ভাঙা আজবেস্টাসের চাল বেয়ে নেমে আসে জলের ধারা। অগত্যা সেদিন বন্ধ করে দিতে হয় স্কুল। স্কুলের হাল যখন এমন মরণফাঁদ তখন কী আর শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে বাড়িতে থাকতে পারেন অভিভাবকরা? অগত্যা স্কুল যতক্ষণ চলে ততক্ষণ কাজকর্ম ছেড়ে স্কুলে বসে থাকতে হয় অধিকাংশ অভিভাবককে। এই অবস্থায় আর কতদিন? মালদা ও পুরুলিয়ার ঘটনার পরেও কী হুঁশ ফিরবে না শিক্ষা দফতর ও প্রশাসনের? উত্তর খুঁজছেন পাত্রসায়ের ব্লকের গঞ্জেরডাঙ্গা গ্রামের মানুষ ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের একমাত্র শিক্ষিকা। সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর অবশ্য স্থানীয় বিডিওকে ওই স্কুলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে বিষ্ণুপুরের মহকুমা প্রশাসন। মহকুমা প্রশাসনের যুক্তি বিষয়টি আগে জানলে তখনই পদক্ষেপ করা যেত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct