মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, বর্ধমান, আপনজন: বর্তমান পূর্ব বর্ধমানের মুঘল সাম্রাজ্যের শরিফাবাদ অর্থাৎ বর্ধমানের একটি প্রসিদ্ধ স্থান আলমগঞ্জ। এই আলমগঞ্জে আছে একটি ঐতিহাসিক মসজিদ, যার অপরূপ সৌন্দর্য, প্রত্যেক মুঘল স্থাপত্যের নিদর্শন অনুযায়ী এই মসজিদের ও তিন গম্বুজ, চার মিনার । ভেতরে একটি মিম্বর যা খুদবা পাঠের জন্য ব্যাবহার হতো । খিলেনের কাজ করা, মোটা মোটা দেওয়াল, চুন সুরকির দেওয়াল ও প্লাস্টার। এই মসজিদটির নাম লাখিয়া মসজিদ বা লক্ষিয়া মসজিদ। পির শেখ লাখিযা সাহেবর নামে মসজিদ। লাখিয়া মসজিদের ই.সি নাম্বার ১৪৬৯২, দাগ নম্বর ৬১৩,পরিমাণ ২৮ শতক। রকম- মসজিদ। দাগ নম্বর ৬১২, পরিমাণ ৮ শতক মসজিদের সম্পত্তি। কিন্তু জনৈক ব্যক্তি নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে। যদিও মসজিদের দখলে জায়গাটি। বাকি বহু সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে যার কোন হিসাব আজও পাওয়া যায় না। আগামীতেও পাওয়া যাবে না। ইতিহাস - ভারত সম্রাট ‘্ঔরঙ্গজেবের’ পৌত্র শাহজাদা আজিমুশশান ১৬৯৭ সালে বাংলা, বিহার ,উড়িষ্যার ,সুবেদার নিযুক্ত হন। সেই সময় তিনি শরিফাবাদে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং উক্ত স্থানে বেশ কিছুদিন শাসনব্যবস্থার সু বন্দোবস্তের জন্য আসেছিলেন, বসবাস করেছিলেন এবং দাদু ‘সম্রাট ঔরঙ্গজেবের” নামে উক্ত স্থানটির নাম ‘আলমগঞ্জ’ নামকরণ করেন। এবং সেই সময় বেশ কয়েকটি মসজিদ উনি নির্মাণ করেছিলেন। তার মধ্যে এই মসজিদটি অন্যতম। শাহজাদা আজিমুশশান আলামগঞ্জ ছাড়াও মাহুত টুলি,ও শারাফাতগঞ্জ নামেও দুটি অঞ্চল ও প্রতিষ্ঠা করেন। যা কালক্রমে হারিয়ে গেছে। শাহেনশা আজি মুসশান পিতার নাম মুঘল সম্রাট প্রথম বাহাদুর শাহ ও মাতা মহারাজ কুমারী অমৃতা বাই সাহেবার দ্বিতীয় পুত্র।
জন্ম, ১৫ই ডিসেম্বর ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে, আগ্রা দুর্গে। মৃত্যু - ১৮ই মার্চ ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে, মাত্র ৪৭ বছর বয়সে ,আগ্রার কাছে। সম্রাট ‘আজিমুসশান’-এর নাম বর্ধমান বাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, আলমগঞ্জে নামের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে এবং লাখিয়া মসজিদের ব্যয়ভার ও সম্পত্তি দানের জন্য। (যদিও এই মসজিদ মেরামতের সময় ১৯৮০ সালে প্লাসতারা ছাড়ানোর সময় নামের ফলকটি ভেঙ্গে গেলে কোন ইতিহাসবিদ বা কোন ব্যক্তি ঐ ফলকটি নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছে জানা যায় কিন্তু নাম জানা যায় নাই)। বর্তমানে ওয়াকফ বোর্ড ১৭-৩-২২ একটি নতুন পরিচালক কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct