সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: পুকুরের জলের ওপর লোহার মরচে ধরা পুরনো বৈদ্যুতিক খুঁটি মরণ ফাঁদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গবাদি পশু থেকে এলাকার কয়েকশো পুরুষ মহিলা দিনের পর দিন পুকুরের স্নান করছে, ভুরুক্ষেপ নেই বিদ্যুত দপ্তরের । সোনামুখীর কৃষ্ণবাটিতে এরকমই এক মরণফাঁদের জলে স্থানীয় দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে স্নান করছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে পুকুরের জল থেকে বিদ্যুতের খুঁটি পাড়ে সরানোর দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু আজও তার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই বছরের পর বছর ধরে কৃষ্ণবাটি ও মহেশপুর গ্রামের কয়েকশো পুরুষ ও মহিলা ওই পুকুরে স্নান করছেন। শুধু তাই নয়। দীর্ঘদিন ধরে জলের মধ্যে থাকায় লোহার ওই খুঁটির গোড়া মরচে ধরে ক্ষয়ে গিয়েছে। যে কোনও সময় তা জলের উপর ভেঙে পড়তে পারে। তাতে পুকুরের জল সম্পূর্ণভাবে তড়িতবাহিতে পরিণত হবে। এবং বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা প্রবল। কৃষ্ণবাটি গ্রামের বাসিন্দা মোহন বাউরি বলেন, এলাকার একটিই মাত্র বড়ো পুকুর রয়েছে। তাই ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে স্নান করতে হয়। খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
অপর বাসিন্দারা বলেন, বিদ্যুতের খুঁটির গোড়ার অনেকটা অংশ জলে ডুবে রয়েছে। গ্রীষ্মকালে জল কমলে গোড়ার মাটি দেখা যায়। বর্ষাকালে প্রায় তিনমাস ধরে ওই খুঁটির গোড়ার অংশ জলে ডুবে মধ্যে থাকে। তা মরণফাঁদ জেনেও রোজ আমরা স্নান করি। ওই পুকুরে মানুষ ছাড়াও গবাদি পশুকে জল খাওয়ানো এবং স্নান করানো হয়। পুকুরে মাছ চাষও হয়। বার বার বলার পরেও কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় আতঙ্ক এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।বিষ্ণুপুর-সোনামুখী রোডে কৃষ্ণবাটি গ্রাম। পিচ রাস্তা থেকে পূর্ব দিকে মাত্র ২০০মিটার দূরে রয়েছে একটি বড়ো পুকুর। সেখানে গিয়ে যা দেখা গেল তাতে শিউরে ওঠার মতো অবস্থা। পুকুরটি জলে টইটম্বুর। দক্ষিণ পাড় থেকে প্রায় ২০ফুট ভেতরে জলের মধ্যে একটি লোহার বৈদ্যুতিক খুঁটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই খুঁটির মাথায় উত্তর-দক্ষিণ বরাবর এবং খুঁটির কিছুটা নিচু অংশে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর দুই দিকে হাইটেনশন তার চলে গিয়েছে। দুই দিকে তিনটি করে মোট ছ’টি তার পুকুরের জলের উপর দিয়ে গিয়েছে। যে কোনও একটি তার কোনও ভাবে লোহার খুঁটির সংস্পর্শে এলেই পুরো পুকুরের জলে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে যাবে। তাতে প্রাণহানি ঘটা অবশ্যাম্ভাবি। তড়িতাহত হয়ে প্রাণহানির পাশাপাশি পুকুরের সব মাছও মরে যাবে। ওই পুকুরের তিনদিকে ঘাট রয়েছে। তার মধ্যে সান বাঁধানো ঘাটও রয়েছে। প্রতিটি ঘাটেই স্থানীয় বাসিন্দারা স্নান করছেন। যে কোনও মানুষ ওই দৃশ্য দেখলেই শিউরে উঠবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct