সেখ মহম্মদ ইমরান, কেশপুর, আপনজন: বুধবার কেশপুর গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজের পরিকাঠামোহীনতা ও সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, কলেজে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া হয় না। শিক্ষক ৫ ৪জন থাকার কথা থাকলেও মাত্র আছে দশজন। যদিও খাতায় কলমে দেখানো আছে ২০ জন অর্থাৎ ১০ জন ভুয়ো শিক্ষক। বাস্তবে যাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। নেই কোনো পরিকাঠামো। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। পড়ুয়াদের কিছুই শিখানো হয়নি। কিছুই না থাকলেও পড়াশোনার নামে চলছে রমরমিয়ে ব্যবসা। এছাড়াও কলেজের অধ্যক্ষকে অকারণে বদলি করা হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের অভিযোগের মান্যতা দিলেন স্বয়ং কলেজের অধ্যক্ষ সেখ নাসিম আলী। পি পি পি মডেলে চলা কেশপুর গভর্নমেন্ট আইটিআই কলেজের হতশ্রী দশার পর্দা ফাঁস করলেন স্বয়ং কলেজের অধ্যক্ষ সেখ নাসিম আলী। তিনি বলেন, কুড়ি জন শিক্ষকের অবৈধ ভুয়ো শিক্ষকের তালিকা সরকারি পোর্টালে আপলোড করা আছে।
২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১০ জন শিক্ষকের কোন হদিস নাই। দশজন শিক্ষককেই ক্লাস নিতে হয়। তাদের বেতন মাসে মাত্র ছয় হাজার টাকা। অথচ চুক্তি আছে ১২ হাজার টাকার। শিক্ষকদের কোন সুবিধা না দিয়ে উল্টে টার্মিনেট করানোর ভয় দেখানো হয়। শিক্ষকদের দিয়েই ছাত্র ভর্তি, প্লেসমেন্ট করানো সহ যাবতীয় কাজ জোর করে করানো হয়। কথায় কথায় হুমকি টারমিনেট করানোর ।ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য প্রয়োজনীয় বেঞ্চ নেই। ল্যাবরেটরি পরিকাঠামো কিছুই নেই। তিনি আরো বলেন আমি ম্যানেজমেন্টের হাতের পুতুল কোন কথা আমার শোনা হয় না । এমনকি চোখ ডাস্টার কেনার জন্য রিকুইজিসন পাঠালে ম্যানেজমেন্ট থেকে বলা হয় একমাস আগে থেকে যেন পাঠাতে হবে। তিনি বলেন খড়গপুর আইআইটি থেকে এম টেক করেছি। আমাকে কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষের পদে বসিয়ে আমার চোখের সামনে ম্যানেজমেন্ট একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ করে চলেছেন। তিনি আরো অভিযোগ করেন ম্যানেজমেন্ট থেকে তাঁকে (অধ্যক্ষকে) বলা হয়েছে, যদি কখনো গভর্নমেন্ট দপ্তর থেকে পরিদর্শন করতে আসেন তাহলে যেন বলা হয় কলেজে কুড়িজন শিক্ষক আছেন। তিনি এদিন সাফ জানালেন আমি চাই কেশপুর আইটিআই কলেজের হতশ্রী দশা পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেখুক । অধ্যক্ষ এদিন আরো আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তিনি আজকে এই সত্যটা তুলে ধরার জন্য হয়তো তাকে এই কাজ থেকে টারমিনেট করা হতে পারে। কিন্তু তাতে তিনি একটুও ভয় পান না। ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি মিডিয়ার সামনে এই পর্দাফাঁস করতে দ্বিধাবোধ করেন না। শিক্ষাবিদদের মতে, পিপিপি মডেলে চলা পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ আই টি আই কলেজ গুলোই রমরমিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে। শুধু কেশপুর আই টি আই কলেজে নয়, সমগ্র পশ্চিমবঙ্গেই একই দশা বলে মত অনেকের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct