নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ধৃত শান্তিপ্রসাদ সিনহা কে।বৃহস্পতিবার ধৃতের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সিবিআই এজলাস। আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে । গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার দুই মিডলম্যান প্রসন্ন রায় এবং প্রদীপ সিংহকেও ওই দিন পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।এদিন আদালতকে সিবিআই জানায়, -' গ্রেফতার হওয়া দুই মিডলম্যান প্রসন্ন এবং প্রদীপের কম্পিউটারে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা খুঁজে পেয়েছে তারা'। এই দু'জনের সঙ্গে শান্তিপ্রসাদের যোগাযোগের কথা আগেই জানতে পেরেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তাঁদের ধারণা, এই তালিকা থেকেই যোগ্য প্রার্থীদের নাম যেত এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদের কাছে। নগদের বিনিময়ে পাওয়া যেত চাকরিও। তবে লেনদেনের দায়িত্বে থাকতেন দুই মিডলম্যানই। এদিন এজলাসে শুনানির সময় শান্তিপ্রসাদকে নিজেদের হেফাজতে চায় সিবিআই।সিবিআইয়ের এই যুক্তি শোনার পর এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির সদস্যের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে শান্তিপ্রসাদকে গত ১০ অগস্ট গ্রেফতার করে থাকে সিবিআই। এর পরে ৯ সেপ্টেম্বর আবার তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেয়। তার পর থেকে নিজাম প্যালেসেই ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। বৃহস্পতিবার তাঁর হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শান্তিবাবু কে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই মিডলম্যান প্রসন্ন এবং প্রদীপের সঙ্গে শান্তিপ্রসাদকেও জেরা করা দরকার বলে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই ।তবে আদালত তা গ্রহণ করে নি। প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে। গ্রুপ সি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে থাকে সিবিআই। নিয়োগ সংক্রান্ত যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করেছিলেন তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তার চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছিল শান্তিপ্রসাদকে। অভিযোগ, তাঁর আমলেই মূলত নিয়োগ দুর্নীতি ঘটেছে । শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতেও প্রথম শান্তিপ্রসাদের নাম ছিল । শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলাতেও বারবার তাঁর নাম উঠে এসেছে। এমনকি, তাঁর রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে বেশ কয়েক বার তল্লাশিও চালিয়েছে ইডি এবং সিবিআই।তবে সিবিআই শান্তিপ্রসাদের হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করার আবেদন জানালে, এদিন আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সিবিআই কে । শুনানি পর্বে আদালত জানতে চায় -' এক মাসের বেশি সময় ধরে হেফাজতে নেওয়ার পরও কেন সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ বাড়াতে চাইছে?' এর প্রতুত্তরে সিবিআই আদালতকে জানায় -' শান্তিপ্রসাদ তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। তাই তাঁকে পুনরায় হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার'।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct