সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বাগুইআটিতে বুধবার বিকেলে জোড়া ছাত্র খুনের ঘটনায় সমবেদনা জানাতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সিপিএম নেতারা । বাধ্য হলেন তারা এলাকা ছাড়তে। বিজেপি ও কংগ্রেসের পর এ বার বাগুইআটিতে নিহত ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন সিপিএম নেতৃত্ব। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, নিহতের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলেন তাঁরা। বুধবার বিকেলে অভিষেক নস্করের বাড়িতে যান সিপিএমের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এবং রাজ্য কমিটির সদস্য সৃজন ভট্টাচার্য। প্রথমে তাঁরা মৃতের ছবিতে মালা দিতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। পরে পরিবার এবং পড়শিদের তরফে তাঁদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা রাজনীতি চাইছেন না। এর পরেই সিপিএম নেতৃত্বকে নিহতের বাড়ি ছাড়তে দেখা যায়। পরে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এলেও তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কিছু মানুষজন।যদিও মোহাম্মদ সেলিম দাবি করেছেন তারা গিয়েছিলেন । পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে তৃণমূল যা করার তাই করেছে।
মঙ্গলবার নিহতদের বাড়ি যাওয়ার পথে বাধার মুখে পড়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মী। স্থানীয় বেশ কিছু মানুষজন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এর মধ্যে রাজনীতি চান না। ঘটনাচক্রে, বুধবারই বিকেল নাগাদ বাগুইআটি-কাণ্ডে আর এক নিহত অতনু দের বাড়িতে গিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু এবং বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর সূত্র মারফত। যত সময় এগোচ্ছে ততই বাগুইহাটি জোড়া ছাত্র খুনের ঘটনায় রাজনীতির অঙ্গন তপ্ত হয়ে উঠছে। পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মূলত বাগুইআটির থানার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন নিহতদের পরিবারেরা। সেই কারণেই প্রাথমিক ভাবে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল তাঁদের পক্ষ থেকে। কিন্তু তদন্তভার এখন সিআইডির হাতে যাওয়ায় তাতে ভরসা রাখা হচ্ছে বলেই খবর পরিবার সূত্রের। বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র অতনু এবং অভিষেক। পুলিশ সূত্রে খবর, দুই স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হয় গত ২২ অগস্ট। দু’দিন তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। পরিবারের অভিযোগ ছিল, দু’জনকেই অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অতনুর বাবা অভিযোগ করেন, তিনি মুক্তিপণ চেয়ে ‘মেসেজ’ পেয়েছিলেন। অপহরণকারীরা বার বার মুক্তিপণের অঙ্ক বদলায় বলেও অভিযোগ। এর প্রায় ১৩ দিন পর মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ জেলা থেকে উদ্ধার হয় অতনু এবং অভিষেকের দেহ। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সত্যেন্দ্র চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি ওই দু’জনকে খুন করেছে। পুলিশ ওই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র। অতনু ও অভিষেকের পরিবারের এখন দাবি, তাঁকে দ্রুত খুঁজে বার করে শাস্তি দিতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct