আপনজন ডেস্ক: দেশের ১৩৪ জন প্রাক্তন আইএএস-আইপিএস অফিসার শনিবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিলকিস বানু মামলায় ধর্ষণ ও তার পরিবারের সাতজন সদস্যকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার গুজরাত সরকারের ‘মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত’ সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৫ ই আগস্ট ভারত যখন তার ৭৫ তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উদযাপন করেছিল, তখন গুজরাত সরকার তাদের ক্ষমা নীতির অধীনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের আবেদন মঞ্জুর করার পরে তারা গোধরার একটি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বেরিয়ে আসে। সেই সময় তাদের সমর্থকদের উল্লাস করতে দেকা যায়। ২০০২ সালের ৩ মার্চ গুজরাটের দাঙ্গার সময় আমেদাবাদের কাছে একটি গ্রামে বিলকিস বানুকে গণধর্ষণ করে ওই ব্যক্তিরা। সে সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর এবং সে সময় তিনি গর্ভবতী ছিলেন। সহিংসতায় তার পরিবারের সাতজন জন সদস্যও নিহত হন, যার মধ্যে তার তিন বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে।
প্রধান বিচারপতিকে সাংবিধানিক নীতি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন সিভিল সার্ভিস অফিসার নাজিব জং, ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ, হর্ষ মান্দার, জুলিও রিবেইরো, অরুণা রায়, জি বালাচাঁদরান, রাচেল চ্যাটার্জি, নীতিন দেশাই, এইচ এস গুজরাল এবং মীনা গুপ্তা। চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা জানিয়েছেন, গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্তে তাঁরা ‘গভীরভাবে ব্যথিত’। তারা লেখেন, ‘বিলকিস বানুর ঘটনা আপনি জানেন, অপরিমেয় সাহস এবং অধ্যবসায়ের একটি কাহিনী।’ আরও বলা হয়েছে, সাহসিকতা দেখিয়ে ওই নির্যাতিত এবং ক্ষতবিক্ষত যুবতী তার নিপীড়কদের কাছ থেকে লুকিয়ে পালিয়ে এসে আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার চাইতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রাক্তন আমলাদের দলটি বলেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা “প্রভাবশালী”। তাই, মামলাটি গুজরাত থেকে মুম্বাইয়ের সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের একটি বিশেষ আদালতে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল যাতে একটি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা যায়। তারা বলেন, মামলাটি একটি বিরল ঘটনা, কারণ শুধু ধর্ষক ও খুনিদেরই শাস্তি দেওয়া হয়নি বরং পুলিশ ও ডাক্তাররাও ছিলেন যারা অভিযুক্তদের রক্ষা করতে এবং অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রমাণ লোপাট ও বিকৃত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাই দোষীদের মুক্তির বিষয়ে গুজরাত সরকার যে ‘ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct