জিয়াউল হক, চুঁচুড়া, আপনজন: ঘড়ির কাটায় তখন পৌনে বারোটা হবে। চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে ঠাসা ভিড়। চলছে আউটডোর। এমারজেন্সির সামনে থেকে মানুষের ঘনঘন যাতায়াত লেগেই রয়েছে। এমারজেন্সির সামনে পুলিশের একটি সুমো গাড়ি। কিছুটা দূরে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান। প্রিজন ভ্যানে রয়েছে গতকাল খাদিনা মোড়ের তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত বিজেপি কর্মীরা। সুমো থেকে নামানো হল চুঁচুড়ার কুখ্যাত দুই দুষ্কৃতি টোটোন বিশ্বাস ও সঞ্জয় হালদার ওরফে বিষপাইকে। চুঁচুড়া হাসপাতালে দুজনকে মেডিক্যাল করিয়ে আদালতে তোলার কথা ছিল। সেইমত দু’জনকে এমারজেন্সির ভিতর প্রবেশ করায় পুলিশ। এমারজেন্সিতে মেডিক্যাল করিয়ে টোটন ও বিষপাইকে বের করার সময়ই টোটোনকে লক্ষ্য করে কেউ বা কারা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। গুলি টোটোনের পেটে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে টোটোন ও বিষপাই পুলিশের সহযোগীতায় বাইরে বেরিয়ে আসে। দুজনকে বাইরে থাকা প্রিজন ভ্যানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ততক্ষনে চারিদিকে হুড়োহুড়ি পরে গেছে। আউটডোরে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী সহ রোগীর পরিবার এবং হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর পরিবারেরা ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। কিছুক্ষনের মধ্যেই চুঁচুড়া থানার পুলিশ আধিকারিক সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে উপস্থিত হয়। একে একে চন্দননগর কমিশনারেটের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত হন হাসপাতালে। প্রিজন ভ্যানের ভিতর থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় গুলিবিদ্ধ টোটোন বিশ্বাসকে। পুলিশ কর্তাদের টোটোন বলে যাচ্ছে স্যার আমাকে বাইরে বের করবেন না আমাকে মেরে দেবে। এরপরই পুলিশ টোটোনকে ধরে নিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে হাসপাতালে ঢোকানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ত্রোপচার করে টোটোনের পেট থেকে গুলি বের করা হয়। বাইরে তখন টোটোনের পরিবার সহ অনুরাগীরা উপস্থিত হন। সকলেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দুপুর সওয়া দুটোর পর টোটোনকে চিকিৎসার জন্য কোলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। কোলকাতায় যাওয়ার পথে টোটোন সাংবাদিকদের জানায় বাবু পাল আমায় মেরেছে। যদিও এবিষয়ে এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে খোদ হাসপাতালে ভিতরে পুলিশি হেফাজতে থাকা আসামিকে গুলির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে সাধারন মানুষ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct