সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: কলকাতায় পার্ক স্ট্রিটের অদূরে জাদুঘরের কাছে শনিবার সন্ধ্যায় চলল গুলি। জাদুঘরের কাছে এমএলএ হস্টেলের পাশে সিআইএসএফ (কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী) ব্যারাক লক্ষ্য করে গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, কর্তব্যরত সহকর্মীদের নিশানা করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান গুলি চালিয়েছেন। ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর। ওই সূত্র মারফতই জানা গিয়েছে, গুলি চালনার ঘটনায় আর এক জন আহত হয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে ট্রমা বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কলকাতা পুুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় দেড় ঘণ্টার অপারেশন শেষে আটক করা হয় হামলাকারীকে। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কিডি স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের উল্টো দিকে ভারতীয় জাদুঘরের গেটের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাত ৮টা নাগাদ ওই হামলাকারীকে নিরস্ত্র করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। হামলাকারীর নাম অক্ষয়কুমার মিশ্র। তিনি ওড়িশার বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, একে-৪৭ বন্দুক দিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় ওই জওয়ান। সহকর্মী জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। সূত্রের দাবি, ঘটনায় দু’জন আহত হলে তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে। নিহতের নাম রঞ্জিত সরঙ্গি। তিনিও ওড়িশার বাসিন্দা। আহত জওয়ানের নাম সুবীর ঘোষ।খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও ঘটনাস্থলে যান । ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জয়েন্ট সিপি (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাও।বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় সেখানে। এর পরেই বিশাল কমান্ডো বাহিনী ঢোকে জাদুঘরের ভিতরে। নিয়ে আসা হয় অ্যাম্বুল্যান্সও। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান ‘‘এক জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এক জন আহত। অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি চলেছে। কম্যান্ডো এনে অপারেশন চালানো হয়েছে। হামলাকারীকে বুঝিয়ে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে। আটক করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ দেড় ঘন্টার টানা অপারেশনে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ জওয়ানকে বাগে আনতে সক্ষম হয় কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ব্যারাকের ভিতরেই ছিলেন হামলাকারী। যাতে উদ্বিগ্ন ছিলেন পুলিশের পদস্থ কর্তারা। কারণ, হামলার সময় ব্যারাকে শতাধিক জওয়ান ছিলেন। পুলিশ সূত্র জানা গেছে, অভিযুক্ত কনস্টেবল যাতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, সেই চেষ্টাই করা হয়েছে প্রথম থেকে। শেষমেশ দেড় ঘণ্টা পর ওই হামলাকারী জওয়ানকে আটক করে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় শনিবার শহরের বুকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct