সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: জীবনে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার কে মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। জোর করে জেলবন্দি রোহিঙ্গাদের মায়ানমার পাঠানো যাবে না বলে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। এর পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ‘তাদের (রোহিঙ্গাদের) সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে যা যা প্রয়োজন সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে দমদম জেল কর্তৃপক্ষকে’। চারজন রোহিঙ্গাকে আজ অর্থাৎ শুক্রবার মায়ানমার চলে যেতে হবে বলে জানিয়েছিল দমদম জেল কর্তৃপক্ষ। তবে গত বৃহস্পতিবার এর বিরুদ্ধে আইনজীবী মারফত হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন ওই চার রোহিঙ্গা। ফতিমা বিবি-সহ আরও তিনজনের তরফে তাঁদের বক্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যর সামনে তুলে ধরেন তাঁদের আইনজীবী। বিচারপতি কেন্দ্র ও রাজ্যের আইনজীবীদের থেকে এই ধরনের কোনও নির্দেশ আছে কি না? তা জানতে চান।কেন্দ্রের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী এজলাসে জানান, ‘তাঁর কাছে কোনও এই ধরনের নির্দেশ নেই’। অপরদিকে, রাজ্যের আইনজীবী অনির্বাণ রায় এজলাসে জানান, ‘তাঁর কাছেও কাছে এই রকম খবর নেই’।
দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, ‘আপাতত রোহিঙ্গাদের মায়ানমার ফেরত যেতে বাধ্য করা যাবে না। যেহেতু আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে, তাই পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত তাদের ব্যবস্থা করতে হবে দমদম জেল কর্তৃপক্ষকে’। আগামী ১০ অগস্ট ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে । রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র আদালতে আইনজীবী মারফত পরবর্তী শুনানির দিন হলফনামা আকারে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।হাইকোর্ট পরিস্কার জানিয়েছে -’ আদালতের নির্দেশ ছাড়া কোথাও তাদের পাঠানো যাবে না’। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, রোহিঙ্গাদের বাঁচার অধিকার যাতে কোনও ভাবে খর্ব না হয়, তার দিকে নজর রাখতে হবে। এক্ষেত্রে দমদ৬জেল কর্তৃপক্ষকেই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালে ৪ জন রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে আসে। ওই চারজন মহিলাকে মালদা সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের সবাইকে জেল এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যদিও এরা ভারতেই থাকতে চায়। তাদের রিফিউজি কার্ড রয়েছে। ধৃত এই ৪ রোহিঙ্গাদের আদালতের নির্দেশ ছাড়া মায়ানমারে পাঠানো যাবে না বলেই নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য।আগামী ১০ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct