সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া এলাকার এক জমির অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে তলব করল আদালত। আগামী ২৯ জুলাই আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে মুখ্যসচিবকে। শুধু তাই নয় তাঁর জবাবদিহি চেয়েছে আদালত। এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের ডিভিশন বেঞ্চ। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলায় আদালতে ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে।প্রসঙ্গত , কাটোয়ায় একটি জেটিঘাট তৈরি করার জন্য শুভা সাহা সহ মোট তিনজনের থেকে জমি নিয়েছিল রাজ্য সরকার। বে অভিযোগ, -’ সেই জমি দেওয়ার জন্য তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি’।জমির ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে এই নিয়েই মামলা।প্রথমদিকে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জমিদাতারা। তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল মামলাকারীদের পক্ষে। গত ২০১৯ সালে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ দিয়েছিল, ‘আবেদনকারীদের জমির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে’। পরবর্তীতে সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। দু বছরের বেশি সময় ধরে হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলে। ডিভিশন বেঞ্চও মামলার শুনানি চলাকালানী রাজ্য কে বারবার নির্দেশ দেয়, জেটিঘাটের জন্য জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য।এমনকী আবেদনকারীদের কত অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সেটিও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের থেকে। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ওই তিনজনকে মোট ৯০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়।
কিন্তু তারপরও এখনও পর্যন্ত ওই তিনজনকে সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যা একপ্রকার আদালত অবমাননা বলা যায়। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। আদালতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দিয়ে মুখ্যসচিবকে জানাতে হবে -’ কেন আদালত বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি’। আগামী ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি কৃষ্ণা রাও-এর ডিভিশন বেঞ্চ। সুভাষ সাহা-সহ তিন জনের জমি নিয়ে কাটোয়াতে একটি জেটিঘাট তৈরি হয়েছিল । তাঁদের দাবি, জমি নিলেও তাঁদের কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। ২০১৯ সালে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আবেদনকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে প্রশাসনকে ।সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি কৃষ্ণা রাও-এর ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। মামলার শুনানি চলাকালে ডিভিশন বেঞ্চ বারবার রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী তিনজনকে মোট ৯০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য । আদালত বারবার বলা সত্বেও সেই ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় এদিন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ২৯ জুলাই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হাইকোর্টে ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরা দিতে হবে । তাঁকে জানাতে হবে, আদালত বারবার বলা সত্ত্বেও কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি জমিদাতাদেরকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct