ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মুস্তাফিজুর রহমান
আর কয়েক দিনের মধ্যেই আগমন ঘটতে চলেছে অনেক অপেক্ষাকৃত খুশির দিন ঈদুল আজহা বা কুরবানীর ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বাৎসরিক দুটি খুশির দিনের মধ্যে এটি একটি অন্যতম দিন। যদিও বছর ঘুরে ঈদ আসে ঈদ যায়, তবুও আমরা ঈদের মর্মার্থ ভালো ভাবে কিছুই বুঝিতে পারি না। নামাজ পড়ে কোন রকম ভাবে দিন টা কাটিয়ে দিই। এভাবে আমাদের ঈদ উৎযাপন হয়ে যায়। এবার আসি মুল কথায় ঈদ একটি আরবি শব্দ যার মুল অর্থ ফিরে আসা,যেহেতু বছর ঘুরে এই দিন টা খুশির বাতাবরন নিয়ে ফিরে আসে তাই পারিভাষিক ভাবে এই দিন কে খুশির দিন ও বলা হয় । আর পূর্ণ ঈদুল আজহা শব্দের অর্থ হল সকালের ঈদ। এই ঈদের উপলক্ষে এক ঐতিহাসিক পেক্ষাপট জড়িয়ে আছে। প্রানপ্রিয় পুত্র ঈসমাইল আঃ কে ইব্রাহিম আঃ এর কুরবানীর করার হুকুম দেওয়া হয়, যা ছিল মুলত একটি অগ্নিপরীক্ষা। ইসলাম প্রতিটি কর্মকান্ডের সুবিন্যস্ত ব্যাখ্যা আছে, যা যুক্তি দিয়ে যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করা যায়। প্রিয় জন কে প্রিয় জিনিস টা উপহার দেওয়ার মতোই এই ঘটনা টি ঘটেছিল। সেই ঘটনা স্বরনীয় করতে কুরবানী ঈদ উৎযাপন। অন্য দিকে ইসলাম যে সাম্যের কথা বলে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল এই পবিত্র ঈদ। ইসলামের প্রতিটির কর্মের উপযুক্ত যুক্তি আছে। আমাদের ঈদের তাৎপর্য বুঝতে হবে। ঈল উল ফিতরের ব্যাখ্যায় এখন আসছি না, কুরবানী ঈদের ব্যাখ্যা তে আপাতত আসি। এই দিনেতে অন্যতম কাজ হলো পশু কুরবানী করা, পশু প্রেমিরা বলতে পারে জীব হত্যা মহাপাপ কিন্তু এখন বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত যে গাছের ও প্রান আছে সেই নিরিখে বিচার করলে দেখা যায় শাক সবজি ও খাওয়া যাবে না। এক স্রষ্টা মানবকল্যাণে তরে সব কিছুই তৈরি করেছে এটা মানতে হবে সকলের। এইসব উৎভট কথা গ্ৰহণ যোগ্য নয় মোটেও। তাই আমাদের কুরবানীর মৌলিক ব্যাপার টা বোঝার চেষ্টা করতে হবে সকলের।
যিনি অর্থবান সেই শুধু খুশি করবে এমন টা নয়, গরিবদের প্রাপ্য অধিকার দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটানো অর্থবান দের উপরে দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা জানি যে যারা আসহয় যাদের ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ অবস্থা তাদের কাছে দৈনন্দিন মাংস বিলাসিতা মাত্র। তারা তাদের ক্ষুধার্ত বাচ্ছা দের মুখে এই প্রোটিন যুক্ত খাওয়াতে অনেক সময় সক্ষম নয় ,তাই ইসলামের এই বিধান কুরবানী মাংসের একটি নির্দিষ্ট অংশ গরিবের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে করে এই অন্যতম খুশির দিনে তারাও খুশি মেজাজে ঈদ উৎযাপন করতে পারে, কেও যেন অভুক্ত না থাকে , সকলেই সমান ভাবে এই খুশিতে আংশ গ্ৰহণ করে। অন্যদিকে কুরবানীর দিনে যে সমস্ত অস্ত্র দিয়ে পশু জবাই করা হয় সেই অস্ত্র গুলো তদানীন্তন কালে আর্ত রক্ষায় বা পরবর্তীতে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হত, যা অনেক কল্যানদায়ক হতে পারে। এবং এগুলি দ্বারা কাঠ কর্তনে কৃষিকার্য ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়। সর্বোপরি পরবর্তীতে আমাদের বিভিন্ন কাজে আসে এই অস্ত্র গুলো পুরো বছর ধরে বিভিন্ন কর্মের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও কুরবানী যবাহ কৃত পশুর চামড়া দিয়ে বিভিন্ন রকমের পোশাক পরিধান তৈরি করা হয়। আমরা জানি যে গবাদি পশু রাও, অন্যান্য পশুর মতো একটা নির্দিষ্ট সময় পর মৃত্যু বরন করে। তাই এই পশু গুলিকে উপযুক্ত কাজে লাগিয়ে অনেকের অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেয় এই কুরবানী ঈদ। সর্বদিক দিয়েই বিচার করলে দেখা যায় শুধু কল্যান আর কল্যান। ঈদ আসুক মনের অভ্যন্তরে আনন্দের জোয়ার বয়ে নিয়ে। গরিব রা ফিরে পাক তাদের প্রাপ্য,সাম্যের বাতাবরন তৈরি হোক সমাজে। এই কাম্য হোক আমাদের.....
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct