আপনজন ডেস্ক: বর্ষাকালে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ বাড়ে। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, ডায়রিয়া ইত্যাদি এই সময় বেশি দেখা দেয়। এছাড়াও মৌসুমী রোগব্যাধির মধ্যে চিকুনগুনিয়া অন্যতম। হঠাৎ উচ্চমাত্রার জ্বর ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ। এই রোগে মৃত্যু ঝুঁকি প্রতি দশ হাজারে এক জন বা এর চেয়েও কম। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়। এই ভাইরাসটি মশার কামড়ের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে। এডিস গনের দুটি প্রজাতি এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস এই ভাইরাসের বাহক হিসেবে পরিচিত। তারা মূলত দিনের আলোতে কাঁমড় দিয়ে থাকে। মানুষ ছাড়াও কয়েকটি প্রাণি বানর, পাখি, তীক্ষ্ণ দন্ত প্রাণী যেমন ইঁদুরে এই ভাইরাসের জীবনচক্র বিদ্যমান। রোগ সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করে ভাইরাসের আরএনএ বা ভাইরাসের এন্টিবডির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। এই রোগের উপসর্গকে অনেক সময় ডেঙ্গু জ্বর এবং জিকা জ্বরের সঙ্গে ভুল করে তুলনা করা হয়। একক সংক্রমণের পর এটি বিশ্বাস করা হয় যে, বেশিরভাগ মানুষই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। এখানেই ডেঙ্গু ভাইরাসের সঙ্গে এর পার্থক্য কারণ ডেঙ্গু ভাইরাস শুধু স্তন্যপায়ীদের আক্রান্ত করে। এই রোগ থেকে বাচতে মশা নিয়ন্ত্রণ এবং যেসব এলাকায় এ রোগের ঘটনা সাধারণত ঘটেছে সেসব স্থান পরিত্যাগ করা। জল আছে এমন স্থানে মশা কমানো এবং পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবস্থা ও মশারি ব্যাবহারের মাধ্যমে এর প্রাদুর্ভাব কমানো যেতে পারে। এই রোগের কোন প্রতিষেধক বা চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। সাধারণত জ্বর এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা কমানোর জন্য বিশ্রাম, তরল খাবার গ্রহণ এবং সাধারণ জ্বরের ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ভাইরাসের সুপ্তিকাল এক থেকে বারো দিন। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে তা তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত থাকে। অনেক সময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কোনো উপসর্গ প্রকাশ পায় না। সাধারণত ৭২-৯৭% ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেয়। ফুসকুড়ি রোগের শুরুতেই দেখা দিতে পারে তবে অনেক সময় রোগ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ির আবির্ভাব হয়। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, পেটব্যথা, ফটোফোবিয়া বা আলোর দিকে তাকাতে সমস্যা, কনজাংটিভাইটিস। বড়দের আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টে প্রদাহ হতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct