নিজস্ব প্রতিবেদক, হাওড়া, আপনজন: এবার রবিনসন স্ট্রিট কান্ডের ছায়া হাওড়ায়। মায়ের মৃতদেহ আগলে রেখেই দিন কাটাচ্ছিলেন মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে। কয়েক দিন এভাবেই কেটে যায়। এরপর শনিবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। ঘরের দরজা ভেঙে দেখা যায় পড়ে রয়েছে মায়ের পচা গলা দেহ। পাশেই বসে রয়েছেন ছেলে। কার্যতই এমন দৃশ্য দেখে চমকে ওঠেন বহুতল আবাসনের বাসিন্দারা। হাওড়ার সাঁকরাইলের নাজিরগঞ্জে ওই ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে চারতলা আবাসনের ঘর থেকে উদ্ধার হয় মহিলার পচা গলা দেহ। জানা গিয়েছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই যুবক প্রায় ৩ দিন ধরে মৃত মায়ের দেহ আগলে রেখেছিলেন। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে মৃত মায়ের দেহ আগলে পাশে বসে রয়েছেন ছেলে। মৃতা তাপসী পাত্রের(৫৮) দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। শনিবার ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার সাঁকরাইল থানা এলাকার নাজিরগঞ্জের চুনাভাটির এক বহুতল আবাসনে। মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে দেবাশিস পাত্রকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে মারফত জানা গিয়েছে, দেবাশিস বিশেষভাবে সক্ষম। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী। নিজের কাজ নিজে করতে পারেন না। শুধু তাই নয়, তিনি ঠিকভাবে নিজের প্রয়োজনের কথাও বলতে পারতেন না। হাওড়ার নাজিরগঞ্জের চুনাভাটি এলাকার এক আবাসনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন মা। বেশ কয়েকদিন ধরেই মা আর ছেলেকে দেখা যাচ্ছিল না। ঘর ছিল বন্ধ। শনিবার সকাল থেকে চারতলার ওই ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বেরতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘর থেকে দুর্গন্ধ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় আবাসনের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। খবর পেয়ে রাত প্রায় ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছায়। ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ অবস্থায় ছিল। এলাকার মানুষদের উপস্থিতিতে চারতলার ওই ঘরের দরজা ভাঙা হয়। সেখান থেকে মৃত মায়ের দেহ এবং ছেলেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দরজার তালা ভেঙে ঢুকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এর পাশাপাশি অসুস্থ দেবাশিসকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। ২-৩ দিন আগে তাপসী পাত্র মারা গিয়েছেন বলেই অনুমান করছে পুলিশ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct