আপনজন ডেস্ক: নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে শ্রীলংকা। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে দেশটির রাজনীতি থেকে শুরু করে মানুষের দৈনন্দিন জীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। এরইমধ্যে জ্বালানি সংকটে দেশের সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে শ্রীলংকান কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার দেশটির জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, সারা দেশে ‘বর্তমান জ্বালানী ঘাটতি এবং পরিবহন সুবিধার সমস্যাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে’ অপরিহার্য পরিষেবাগুলো বাদে অন্যান্য সরকারি অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শ্রীলংকা এখন প্রায় পেট্রলবিহীন এবং অন্যান্য জ্বালানিরও তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন। শুক্রবার হাজার হাজার মানুষকে জ্বালানী স্টেশনগুলোতে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এর আগে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করতে না পারায়, দিনে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শুধু ক্রমবর্ধমান জ্বালানী ঘাটতিই নয় অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আমদানির জন্য অর্থ খুঁজে পেতে সংগ্রাম করছে দেশটির সরকার। বর্তমানে শ্রীলংকা সরকারের তহবিলে রয়েছে দুই দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ববাজার থেকে নেয়া ঋণের তুলনায় অতি নগণ্য। দেশটির ঋণের মধ্যে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ডে রয়েছে ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ, এরপরই জাপান- শ্রীলংকাকে দেওয়া তাদের ঋণের পরিমাণ ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। আর চীন সরকার দিয়েছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। আমদানির জন্য বিপুল এই রিজার্ভ ঘাটতি দেশটিতে জ্বালানি, শক্তি, খাদ্য এবং ওষুধের সংকটের জন্ম দিয়েছে।এদিকে নানাবিধ সংকটের মধ্যেই দেশজুড়ে বিরোধীদের প্রতিবাদ ও অস্থিরতা চলছে। বিক্ষোভকারীরা গ্যাস ও জ্বালানির দাবিতে প্রধান সড়ক অবরোধ করেছে। অন্যদিকে শ্রীলংকায় আরো ৯ জন নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। নতুন নিয়োগ পাওয়া নয় জন মন্ত্রীই শুক্রবার শপথ নিয়েছেন। এতে করে আগের মন্ত্রিসভার পদত্যাগের পর সরকারকে স্থিতিশীল করার চেষ্টার অংশ হিসেবে নিয়োগ করা নতুন মন্ত্রীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct