আপনজন ডেস্ক: তুরস্কের ইস্তাম্বুল প্রদেশের ফাতিহ জেলায় অবস্থিত হিরকা-ই শেরিক মসজিদ। প্রতিবছর রমজান মাসে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যবহৃত পোশাক প্রদর্শনী হয় এখানে। করোনা মহামারি সংক্রমণ রোধে গত দুই বছর তা বন্ধ ছিল। এ রমজানে মাত্র ৮ দিনের জন্য মহানবী (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত এ পোশাকের প্রদর্শন শুরু হয়।গত শুক্রবার শুরু হওয়া প্রদর্শনীতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। উওয়াইস আল-কারনির বংশধর বারিস সামির বলেন, শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে ঐতিহাসিক এ পোশাকের প্রদর্শনী শুরু হয়। এরপর রমজানের শেষ ৮ দিন তা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ইতিমধ্যে তা দেখতে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সপ্তম শতাব্দির বিশিষ্ট তাবেয়ি উওয়াইস আল-কারনি (রহ.) [মৃত্যু ৬৫৬ খ্রি./৩৬ হিজরি] মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে দেখতে মদিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু মায়ের অসুস্থতার কারণে মহানবীকে না দেখেই মাঝপথ থেকে তাকে ফিরে আসতে হয়। অকৃত্রিম ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে মহানবী (সা.) সাহাবিদের মাধ্যমে তাকে একটি পোশাক উপহার দেন। পরবর্তীতে উওয়াইস আল কারনি (রহ.) ইয়েমেন থেকে সেই পোশাক গ্রহণ করেন। মহানবীর মৃত্যুর ২৪ বছর পর খলিফা আলি (রা.)-এর সেনাবাহিনীতে যুদ্ধ করে তিনি মারা যান। তার কোনো সন্তান ছিল না। তাই উত্তরাধিকার হিসেবে এ পোশাক তার ভাইয়ের কাছে থাকে। তারই বংশধররা দীর্ঘ ১৪শ বছর ধরে এ পোশাকা যত্নসহ সংরক্ষণ করে আসছেন। আল কারনি পরিবার গত কয়েক শতাব্দি ধরে তুরস্কের দক্ষিণ আনাতোলিয়ায় বসবাস করছেন। এরপর তারা এজিয়ান অঞ্চলের কুসাদাসিতে আসেন। সপ্তদশ শতাব্দিতে উসমানীয় সুলতান প্রথম আহমদ আল কারনি পরিবারকে পবিত্র এ পোশাকটি ইস্তাম্বুলে নিয়ে আসতে বলেন। সেখানে আগ থেকেই অনেক পবিত্র নিদর্শন সংরক্ষিত ছিল। চাদরটি ইস্তাম্বুলে এনে তা একটি তালাবদ্ধ বাক্সে প্রদর্শনের জন্য দুটি চাবি তৈরি করা হয়। একটি সুলতানের কাছে রাখা হয়। অন্যটি আল কারনি পরিবারের কাছে রাখা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct