এহসানুল হক,বসিরহাট,আপনজন: এমনিতে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যশালী তাঁত শিল্প।তার মধ্যে আবার রাজ্যে জুড়ে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে লকডাউনে জেরবার ।বর্তমানে বসিরহাটের মহকুমা জুড়ে ২১টি তন্ত সমিতি আছে প্রায় পঁচিশ হাজার কর্মী কাজ করেন।২০১১ সালে বসিরহাট মহকুমা তন্তজীবি ও তাঁত শ্রমিক ইউনিয়ন চালু হয়।বসিরহাটের দেভোগ, শশীনা, সীমান্তবর্তী পানিতর, কঠুর, শ্রীরামপুর সহ একাধিক জায়গায় একসময় তাঁতের খটখটানি শব্দ হত। সেও এখন আর হয়না। শুরু থেকেই এই সমিতিতে কাজ করতেন বহু তাঁত শিল্পী। দীর্ঘদিনের পুরোনো সেই তাঁতও এখন বিলুপ্তির পথে। এই তাঁত শিল্পীদের দুর্গতির আর কোন শেষ নেই। বাজারে এখন তাঁত শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরন, কাচামালের প্রচুর অভাব। যার কারনে সংকটের মুখে পড়ছেন তাঁতিরা ,এখন কাঁচামাল আসছে।মূলত এটা কেরালা ও তামিলনাড়ু থেকে এই সুতোটা আসে।সেখান থেকে না আসার কারনে এই দুর্ভোগ।এমনটাই দাবি করেন বসিরহাট জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি কৌশিক দত্ত । বাজারজাত কারনে অনেক সমস্যা, বাজারে তাঁত শিল্পের পন্য চাহিদা দিন দিন কমে যাওয়ায়, তার উপরে আবার বাজারে এখন বৈদ্যুতিক যন্ত্রচালিত মেশিন। ফলে মেশিনের তৈরী গামছা কাপড়ের সঙ্গে চিরাচরিত হস্তচালিত তাঁত শিল্পীরা তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে পারছেনা। একদিকে যেমন বিক্রির সংখ্যা কমে যাচ্ছে তেমনি আবার তাদের রোজগারও কমে যাচ্ছে। যার কারনে অনেকেই এই তাঁত শিল্পের পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
একজন তাঁত শিল্পী হারুন অর রশিদ মোল্লা বলেন, আগে তাঁত শিল্প পণ্যের সঠিক মূল্য পাওয়া যেত। এখন আর তাতের পারিশ্রমিক মূল্য পাওয়া যায় না। তিনি আরো জানান, এখনকার বাজারে তাতের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বর্তমান বাজারে তেমন আর নেই বললেই চলে। এখন উৎপাদিত পণ্যের আর ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছিনা। অন্যদিকে আজিজুল মোল্লা জানান, মেশিনের তৈরী গামছা, কাপড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আর পারা যায়না, যার ফলে আমাদের শিল্পীদের তৈরী গামছা, কাপড় বিক্রি কমে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের রোজগারও কমে যাচ্ছে।আমাদের এখানে আগে ১২০ জন তাঁতি তাঁত বুনাতেন কিন্তু এখন মাত্র ১৫ জন তাঁত বুনেন। আর যারা কাজ করতেন তারা এখন তাঁতের কাজ ছেড়ে অন্য কাজের সাথে যুক্ত হয়ে গেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct