আজিজুর রহমান,গলসি,আপনজন: নিজের জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি না হওয়ায় পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা। এদিন বেলা দশটা নাগাদ গলসি ১ নং ব্লকের লোয়া রামগোপালপুর পঞ্চায়েতে জড়ো হন এলাকার কয়েকশো চাষি। অফিস টাইমে চাষিরা এসে পঞ্চায়েত এর গেট আটকে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। পঞ্চায়েতের প্রধান ও অফিস কর্মীরা অফিসে আসতেই তাদের পথ আটকে দেন চাষিরা। কর্মীদের গেট আটকে রেখে মাইক হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তারা। চাষিদের দাবী সব পঞ্চায়েতে সরকারি সহায়ক মুল্যে ধান কেনা শুরু হলেও তাদের পঞ্চায়েতে এখনও সেই কাজ শুরু করতে পারেনি। চাষিদের দাবী তাদের উৎপাদিত ধান সরকারি সহায়ক মুল্যে ধান নেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। না হলে ওই পঞ্চায়েত বন্ধ থাকবে। স্থানীয় চাষি কেষ্ট ঘোষ বলেন, সব পঞ্চায়েত চাষিদের সরকারি সহায়ক মুল্যে ধান বিক্রি করার জন্য টোকেন দিচ্ছে। তথচ তাদের এলাকার চাষিরা তা থেকে বঞ্চিত। চাষিদের ধান বিক্রি না হওয়ায় করুণ অবস্থা চলছে। বহু চাষি দেনায় পরে আছে। তিন সিজেন ধরে তারা ফলনে মার খাচ্ছে। এবার আবার ধান বিক্রি হয়নি। এমন চললে তাদের মরন ছাড়া পথ নেই। চন্দন মুখার্জ্জী নামে আর এক চাষি বলেন, তিনি ত্রিশ বিঘা জমি চাষ করেছেন। সেই ধান এখনও পযন্ত বিক্রি করতে পারেননি। তার দাবী এলাকার চাষিরা মহাজনের কাছে ঋন নিয়ে চাষ করছেন সেই টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারিনি। বহু চাষি সোনা বন্ধক রেখে চাষ করেছেন। তাছাড়া ব্যাংক ঋন নিয়ে সেই ঋন পরিশোধ করতে পারেনি। তাদের এলাকার কোন চাষি এখনও এক ছটাক ধান বিক্রি করতে পারেনি। তাই তারা পঞ্চায়েতে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। ওই বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান পম্পা রুইদাস বলেন, তিন মাস ধরে বিডিওর সাথে চাষিদের ধান বিক্রি কথা চললেও শেষে সমবায় ছাড়া ডিপিসি র মাধ্যমে ধান নেওয়া হবে না বলে তাকে জানান গলসি ১ ব্লকের ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাস। তারজন্য তার অঞ্চলের চোদ্দোশো চাষির ধান বিক্রি হয়নি। তাই আজকে তাদের পঞ্চায়েতে ঢুকতে দেয়নি চাষিরা। এবং তার নামে স্লোগান দিচ্ছেন। আগে তাদের মাধ্যমে চাষিদের ধান বিক্রি হয়েছে। এবারেও আশ্বাস দিয়েছিলেন বিডিও দেবলীনা দাস। তারজন্য তিনি তিন বার বিডিওর সাথে বৈঠক করেছেন। শেষ প্রযন্ত কোন সুরাহা মেলেনি। গলসি ১ নং ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাসকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, লোয়া রামগোপালপুর পঞ্চায়েত এর সব চাষির ধান নেওয়া হবে। তার একটা পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে সেই ম্যাসেজটা চাষিদের কাছে ছিলনা। তাই ওই বিক্ষোভ হয়েছে। আর সেই ধান ক্রয়ের বিষয়টি আগের দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। ওই দিন পঞ্চায়েত প্রধান গোটা বৈঠকে না থাকায় তিনি জানতে পারেননি। তাই তিনি ম্যাসেজটি চাষিদের জানতে পারেননি। আজকে প্রধানকে ম্যাসেজ দিয়েছেন। বুদবুদ সমবায় সমিতি মাধ্যমে ও পোতনা এলাকায় চলা ডিপিসি মাধ্যমে ৪ জানুয়ারী থেকে সরকারি সহায়ক মুল্যে ধান কেনা শুরু হবে। তাছাড়াও শিড়রাই সিপিসি তে যে চাষিদের রেজিস্ট্রেশন আছে তাদেরও ধান নেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct