আপনজন ডেস্ক: অনেকের মনে এই প্রশ্নটা জাগে, পৃথিবীতে জল এলো কোথা থেকে? বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর জলের উৎপত্তি-রহস্য সমাধান করতে গিয়ে দেখেছেন তাদের প্রমাণগুলো প্রকারান্তরে সূর্যের দিকেই নির্দেশ করছে। এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই বা এই ধারণাটিকেই কেন্দ্রে রেখে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকার গবেষকরা পৃথিবীতে জলের উৎস নিয়ে টানা গবেষণা করে চলেছেন। আসলে পৃথিবীর সৃষ্টির সময় থেকেই এই গ্রহে জল এসেছিল। সূর্য থেকে চার্জযুক্ত সৌরবায়ু নামে পরিচিত কণাগুলি যখন জলের অণু তৈরি করতে শস্যের রাসায়নিক গঠনকে পরিবর্তন করে, তখন শস্যের মধ্যে এই পা তৈরি হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াটিকে 'স্পেস ওয়েদারিং' বলে। 'নেচার অ্যাস্ট্রোনমি' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবীতে কোথা থেকে এল জল, সূর্যের সৌরবায়ুই এর উত্তর দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরেই পৃথিবীর মহাসাগরের প্রাচীন উৎস নিয়ে বিভ্রান্ত। বিভিন্ন তত্ত্ব পর্যালোচনা করে বোঝা যায়, এক ধরনের জল বহনকারী গ্রহাণু রয়েছে, যা ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এই গ্রহে কোনও ভাবে জল নিয়ে আসতে পারে। গবেষকদের বিশ্বাস, পৃথিবীর কিছু জল অবশ্যই সি-টাইপ উল্কাপিণ্ড থেকে এসেছে। পৃথিবী অবশ্যই অন্তত আরও একটি উৎস থেকে জল পেয়েছে। সেটি হল আইসোটোপিক্যাল আলোক উৎস। কীভাবে এবং কখন জল পৃথিবীতে পৌঁছেছে এবং এই গ্রহের ৭০ শতাংশ পৃষ্ঠকে ঢেকে রেখেছে, যা আমাদের সৌরজগতের অন্য যে কোনও পাথুরে গ্রহের চেয়ে অনেক বেশি, সেটাই বিস্মিত করে গবেষকদের। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানগুলি বায়ুবিহীন বিশ্বের জলের উৎস খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল এস-টাইপ গ্রহাণু নামে পরিচিত একটি ভিন্ন ধরনের মহাকাশ-শিলা থেকে জলের পাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন না। সৌরধুলো বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রথম দিকে সৌরজগতে একটি অত্যন্ত ধুলোময় স্থান ছিল। যা মহাকাশ-বাহিত ধূলিকণাগুলোর পৃষ্ঠের নিচে জল তৈরির জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। গবেষকরা পরামর্শ দেন, এই জল-সমৃদ্ধ ধূলিকণা পৃথিবীর মহাসাগরে সরবরাহের অংশ হিসাবে সি-টাইপ গ্রহাণুর পাশাপাশি প্রথম পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত হত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct