সেখ রিয়াজুদ্দিন,বীরভূম,আপনজন: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি বৃহস্পতিবার বীরভূম জেলা শাসকের দপ্তরের কাছে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয় সিপিআই (এমএল) লিবারেশন, স্বরাজ ইণ্ডিয়া, ইয়ং বেঙ্গল, আদিবাসী অধিকার ও বিকাশ মঞ্চ, অল ইণ্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, সংযুক্ত কিষান মোর্চা সহ বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে। জেলা সদর সিউড়ি বাসস্ট্যাণ্ড থেকে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে মিছিল সহযোগে জেলা শাসকের দপ্তরে যায়।
সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার পর মনোনীত কয়েকজন প্রতিনিধি জেলা শাসকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন। মূলত যে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্মারক লিপি তাহা দলীয় সূত্র মারফত জানা যায় যে, অবিলম্বে দেয়ানগঞ্জের প্রতিবাদী গ্রামবাসীদের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার। ২০১৩’র আইন মোতাবেক কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জনসমক্ষে আনতে হবে।পরিবেশ ও জলবায়ু সংকট প্রশ্নে সংবেদনশীলতা দেখাতে হবে। খনির নামে এসসি,এসটি ও সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ বন্ধ করতে হবে।
সমস্ত দিক খতিয়ে ডেউচা পাচামী কয়লা খনি খোলা মুখ প্রকল্পটিকে বিপর্যয়কর আখ্যা দিয়ে প্রকল্প প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়। প্রতিনিধিদলের সাথে সাক্ষাতে জেলাশাসক সম্পূর্ণ নতুন কথা শোনান বলে প্রতিনিধি দলের সদস্যগণ জানান। যেমন প্রকল্পটির ক্ষেত্রে ২০১৩র জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত আইনটি প্রযোজ্যই নয়। কারণ সরকার জমি অধিগ্রহণ করছে না, জমি কিনে নিচ্ছে। কিন্তু জমি কিনে নিলে পুনর্বাসন প্যাকেজের কথা কেন বলছে সরকার? সে প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি বলে প্রতিনিধি দলের অভিযোগ। এছাড়াও গ্রামবাসীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারকে ডিএম “অনভিপ্রেত” বলেন,স্বীকার করে নেন যে সেরকম ঘটনা ঘটেছে। তাহলে গ্রামবাসীদের ওপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া হচ্ছে না ? দাবি সংগঠনের। জেলা শাসকের বক্তব্য যে, ইতিমধ্যেই প্রকল্পের প্রথম অংশের অধিকাংশ পরিবার জমি দেওয়ার স্বীকৃতিপত্রে সই করেছেন। সংগঠনের প্রশ্ন, অসম্মতিপত্রে কত জন সই করেছেন? সেরকম কোনও ফর্ম নেই বলে জানান। অর্থাৎ অস্বীকৃতি নথিভূক্ত করার কোনও জায়গাই নেই। তাহলে যারা সরকারকে জমি বিক্রি করবেন না তাঁদের কী হবে? একথার কোনও জবাব নেই বলে প্রতিনিধি সদস্যদের দাবি।
জেলা শাসকের সাথে সাক্ষাৎকারের পর সংগঠনের দাবি যে, সরকার রাজ্যবাসীকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে ইচ্ছে মত কাজ করছে, জোর করে সম্মতি আদায় করতে চাইছে এবং ঠিক সিঙুরের সময়কার সরকারের মতই ইচ্ছুক চাষীর গল্প হাজির করছে। বিক্ষোভকারীরা আরো বলেন যে, সরকার সাবধান না হলে পরিণতিও সিঙুরের মতই হবে। ৭ জানুয়ারি ২১ জনের এক প্রতিনিধি দল দেয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙা অঞ্চলে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে যাওয়ার কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এদিন বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন কর্মসূচীর নেতৃত্বে ছিলেন প্রসেনজিৎ বসু, মলয় তেওয়ারি, সুফিয়া খাতুন, জয়তু দেশমুখ, ফারুক ইসলাম, সুরিন্দর সিং, রুদ্র প্রভাকর দাস প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct