সেখ মহম্মদ ইমরান,কেশপুর,আপনজন: তখন দুপুর ১২ টা থেকে সাড়ে বারোটা। এডমিশন রেজিস্টার হাতে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় কেশপুর-১চক্রের মুগবসান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক রায় , সঙ্গে সহ শিক্ষক শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষকের ঘোষণা গ্রামের সমস্ত শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় অন্তে হবে। সেই সঙ্গে তিনি শিশু ও অভিভাবকদের বোঝালেন কেন স্কুলে যাওয়া জরুরী।
শুক্রবার এই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন মুগবসান গ্রামের বাসিন্দারা। করোনা অতিমারি ও লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় থেকে বিমুখ পড়ুয়ারা। ফলে অনেক শিশু বিদ্যালয় থেকে দূরে সরে গিয়ে শিশুশ্রমের কাজে নিযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয় খোলার আগেই শিশুদের বিদ্যালয়ের প্রতি উৎসাহ বাড়াতে ও স্কুলমুখী করতে দুয়ারে শিশু ভর্তি করন কর্মসূচি নিয়েছেন বলে জানালেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক রায়। এছাড়াও তিনি বলেন, অভিভাবকরা যাতে কাজে না পাঠিয়ে স্কুলে পাঠান, সেই বার্তা নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরেছি, ভালো সাড়াও মিলেছে।
শুক্রবার মুগবসান গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বয়স অনুযায়ী কোন ক্লাসে ভর্তি হবে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে এডমিশন রেজিস্টারে নাম নথিভুক্ত করেন তাঁরা। দীপক রায় জানান, কোনো পড়ুয়া ভর্তি হতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গেই ভর্তি নিয়ে নেওয়া হবে। এরকম উদ্যোগে অভিভাবকদের কাছে ভালো সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
এদিন গ্রামে গিয়ে শিক্ষকেরা অভিভাবকদের বোঝান স্কুলে গেলে কি কি সুবিধা পাবে পড়ুয়ারা। স্কুলে ভর্তির জন্য কোন ফি লাগবে না । বিনামূল্যে বই, খাতা , বছরে দু সেট পোশাক, জুতো পাবে। শিশুরা প্রতিদিন দুপুরে পুষ্টিকর খাবার পাবে। এছাড়াও শিশুদের আয়রন ট্যাবলেট দেওয়া হবে। এমন কর্মসূচির জন্য স্কুলের শিক্ষকদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মুগবসান প্রাথমিক বিদ্যালয় কেশপুর ব্লক এর অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয়।
১৯২১ সালে সরকারী অনুমোদন পায়। তিন শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে এই বিদ্যালয়ে। ৯ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। বিদ্যালয়ের নীল সাদা রংয়ের ভবনে শিশু শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য রয়েছে ৭টি শ্ৰেণী কক্ষ। আলাদা অফিস কক্ষ আছে। ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগারও আছে। পানীয় জলের জন্য রয়েছে সাবমারসিবল পাম্প। রাস্তার পাশে বিদ্যালয়টি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। প্রধান শিক্ষক দীপক রায় বলেন, আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রধান দাবী গার্ডেনিং ব্যবস্থা ও খেলার মাঠ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct