আপনজন ডেস্ক: আজ কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোট হচ্ছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ভোট গণনা হবে ২১ ডিসেম্বর এবং ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হবে। ২০২০ সালের মে মাসে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নির্বাচন হতে প্রায় দেড় বছর দেরি হল। মূলত কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে।
এবারের নির্বাচন শাসক দল তৃণমূলের ক্ষমতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। অবশ্য বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্টে তৃণমূলের ফের ক্ষমতায় আসা নিয়ে কোনও সংশয় না থাকলেও বিজেপি এবার কতগুলি আসন পাবে সেদিকেই সবার নজর। বিজেপি পুরসভা ভোটে সন্ত্রাস হতে পারে বলে অভিযোগ তুলে আদালতের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু সে আর্জি খারিজ হয়ে যায়। যদিও কলকাতা পুরসভার ভোট সম্পন্ন করতে পুলিশি নিরাপত্তা কঠোর করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে জানা গেছে, কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ১৪৪টি ওয়ার্ডের বুথের প্রত্যেকটিতে সিসিটিভি নজরদারি রাখা হয়েছে। স্ট্রং রুম ও গণনাকেন্দ্রেও থাকবে সিসিটিভি। মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার পুলিশ। কোনও ধরনের গণ্ডগোলের খবর মিললে েকউ ১৯৫০ হেল্পলাইনে জানাতে পারবেন অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ১৪৪ ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা ৪ হাজার ৯৫৯টি। প্রধান বুথের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৩৯টি এবং অতিরিক্ত বুথ ২২০টি।
তবে, আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতা পুরসভায় তৃণমূল তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার ব্যাপারে নিশ্চিত হলেও দ্বিতীয় স্থানে কে থাকবে তা নিয়ে। এবারের নির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট না করায় তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে বিজেপি। কিন্তু বিজেপি আপাত কল্কে পাচ্ছে না নির্বাচনে। যদিও ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি উজ্জীবিত হয়েছিল কলকাতার বিভিন্ন বুথে তাদের এগিয়ে থাকা নিয়ে। কলকাতা পুরসভার নির্বাচনী খতিয়ান বলছে, ২০১৫ সালে বিজেপি সাতটি আসন পেয়েছিল। আর লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি ২২টিতে এগিয়েছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক ভোটে জেতার পর বিজেপিতে ধস নামতে শুরু করে। তবুও বিধানসভার নিরিখে বিজেপিতে ধস নামে পুরসভার আসনে। মাত্র ১২টি আসনে তারা তৃণমূলের থেকে এগিয়ে থাকে। অার ভবানীপুর উপনির্বাচনের পর ভবানীপুরে এগিয়ে থাকা দুটি আসনে পিছিয়ে পড়ে বিজেপি এগিয়ে থাকে মাত্র ১০টিতে।
বর্তমানে যেভাবে বিজেপিতে ভাঙন তাতে তারা শেষ অবধি কটা আসন ধরে রাখতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থান দখলের লড়াই বাম কংগ্রেসের সঙ্গে।
এবার তৃণমূল পুরভোটে বেশ সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়। দলের পুরনো ৩৯জন কাউন্সিলরকে কাজের নিরিখে প্রার্থী করেনি। তাদের প্রতি এলাকার মানুষের িবরূপ হওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এই সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর। যদিও কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।
২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত কলকাতা পুরসভার ভোটে তৃণমূলের দখলে ছিল ১২২টি ওয়ার্ড, বাম ফ্রন্ট ১৩টি, কংগ্রেস দুটিতে আর বিজেপি সাতটিতে। কিন্তু বিজেপির দুজন কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তাদের সংখ্যা ১২৪ হয়ে যায়। এবারের নির্বাচনে নির্দল সহ মোট ৯৫০ জন প্রার্থী ১৪৪ টি আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ৯৫০ জন মহিলা প্রার্থীর মধ্যে ৪০২ জন। কেএমসি আসনের এক-তৃতীয়াংশ ১৯৯৫ সাল থেকে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ৭৩টি আসন পেলেই তার উপরই বর্তাবে পুরসবার চাবিকাঠি। সেটি তৃণমূলের হাতে উঠবে নিশ্চিত হলেও দ্বিতীয় স্থানের লড়াইয়ে বিজেপি বামেদেরকে টেক্কা দিতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct